আরিফুল ইসলাম, রংপুর, এটিভি সংবাদ
রংপুরের পীরগাছায় লাখ টাকা যৌতুক না দেয়ায় স্ত্রী সাগরিকাকে অকথ্য নির্যাতন করে শ্বাসরোধ করে নৃশংসভাবে হত্যার অভিযোগে স্বামী রফিকুল ইসলামকে দোষি সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এবং ৫ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর ) দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক রোকনুজ্জামান এ রায় প্রদান করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালে ঠাকুরগাও জেলার হরিপুর উপজেলার রহমতপুর ধীরগজ্ঞ হাট গ্রামের আজিম উদ্দিনের মেয়ে সাগরিকা বেগমের সাথে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কান্দি কাবিলপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে মেয়ের পরিবার সোয়া লাখ টাকা প্রদান করে। ঘর সংসার করা কালে আবারো স্বামী ও শশুড় বাড়ির লোকজন আবারো ১ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। গৃহবধু সাগরিকা টাকা দিতে অস্বিকার করায় তাকে প্রায়শই নির্যাতন করতো স্বামী ও শশুড় বাড়ির লোকজন। ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর তারিখে আবারো এক লাখ টাকা বাবার বাড়ি থেকে আনার জন্য চাপ দেয় স্বামী রফিকুল ও শশুড় বাড়ির লোকজন। গৃহবধু সাগরিকা টাকা বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনা সম্ভব নয় জানালে তাকে অকথ্য নির্যাতন করা হয়। এরপর তাকে শ^াস রোধ করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত সাগরিকার বাবা আজিম উদ্দিন বাদী হয়ে পীরগাছা থানায় মামলা দায়ের করে।
মামলায় তদন্ত শেষে পুলিশ স্বামী রফিকুল সহ ৬ জনের নামে আদালতে চার্জসীট দাখিল করে। মামলার বিচার শুরু হলে ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আসামী রফিকুল ইসলামকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। সেই সাথে ৫ আসামীকে বেকসুর খালাস দেন। রায় ঘোষনার পর আসামীকে পুলিশী পাহারায় আদালতের হাজত খানায় নেয়া হয়।
সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী বিশেষ পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন এ্যাডভোকেট বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। এ রায়ের মাধ্যমে যৌতুক দাবি করার জন্য নির্যাতন করা একটা ম্যাসেজ বলে জানান তিনি।