রাজশাহী প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
রাজশাহী মহানগরীতে এক সময় হাজার হাজার পুকুর ছিল। দশ বছর আগে এই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছিল ৯৫২। বর্তমানে পুনরুদ্ধারের জন্য খুব কম পুকুর বাকি আছে। ২০১৪ সালে সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রাজশাহীতে পুকুর ভরাট ও দখল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট আবেদন করেন।
এই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট ২০২২ সালের ৮ আগস্ট রাজশাহী শহরের পুকুরগুলো সংরক্ষণের নির্দেশ দেন। নগরীর মেয়র, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক ও র্যাবকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুকুর ভরাট বন্ধ হয়নি। এটি তাপমাত্রা বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করে।
কিন্তু পুকুর ভরাট আজও থেমে নেই। এক মাস আগে যে পুকুর ছিল তা রাতারাতি ভরাট করে সেখানে কলা বাগান করা হয়। আইনে পুকুর ভরাট নিষিদ্ধ হলেও রাজশাহী মহানগরীর দায়রাপাক মোড় এলাকায় পুকুরের পানিতে ডুবে মৃত্যু ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন।
২৫ মার্চ রাতে একের পর এক ট্রাক বালু দিয়ে পুকুর ভরাট করতে থাকে। যারা ভরাটের কাজে অংশ নেন তারা জানান, পুকুরটি ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাদের। তবে তারা তাদের নাম জানায়নি।
এ বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পুকুরে অভিযান চালায়। বেআইনিভাবে পুকুর ভরাটের অভিযোগে ৫০,০০০ টাকা জরিমানা হতে পারে। তবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চলে যাওয়ার পর পুকুর ভরাটের কাজ শুরু হয়। তারপর আসে ঈদের ছুটি। আমরা পুকুর সংস্কারেও সক্রিয়ভাবে কাজ করছি। কয়েকদিনের মধ্যে ভরাটের কাজ শেষ হবে। তার ওপর তৈরি করা হবে বাগান।
সাড়ে চার বিঘার এ পুকুরটি ছিল নাটোরের গোলাম মাওলা নামের এক ব্যক্তির। পরে কয়েক ব্যক্তি এটি কিনে নেন। ক্রেতাদের একজন বাগমারার আত-তিজারা গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল হালিম। আত-তিজারা রিয়েল এস্টেট কোম্পানি লিমিটেড নামে তার আবাসন ব্যবসা আছে।
জেএমবি নেতা বাংলা ভাই আবদুল হালিমের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। জেএমবির সঙ্গেও তার সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এরপর তিনি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত হন। এরপর বাগমারার সাবেক জনপ্রতিনিধি আনামুল হকের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তিনি আবুল কালাম আজাদের আত্মীয়দের একজন এবং বাগমেরের বর্তমান প্রতিনিধি।
আব্দুল হালিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কেনার পর কয়েকজন বন্ধু মিলে পুকুরটি ভরাট করে বাড়ি তৈরি করি। এর শ্রেণি এখনো পুকুরই আছে। শ্রেণি পরিবর্তনের জন্য আবেদন করা হয়নি।’ আইনে পুকুর ভরাট নিষিদ্ধ- এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।