নিজস্ব প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন মতে, কোনো এলাকায় ব্রম্নটো ইনডেক্স ২০ শতাংশের ওপরে থাকলেই তা ডেঙ্গু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হয়। সেখানে রাজশাহীর ব্রম্নটো ইনডেক্স ৪৬ দশমিক ৬৭ শতাংশে পৌঁছে গেছে। রাজশাহী মহানগরীর ৩৮ শতাংশ বাড়িতে মিলেছে এডিসের লার্ভা। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে এমনই চিত্র।
এর পরপরই রাজশাহী সিটি করপোরেশনকে চিঠি দিয়ে জনসচেতনতায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক। এদিকে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় পাঁচ সদস্যের মেডিকেল টিম গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পাঁচটি ওয়ার্ডের ৭৫টি বাড়ি থেকে জমে থাকা পানির নমুনা সংগ্রহ করে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে ২৮টি নমুনাতেই মিলেছে এডিসের লার্ভা।
এসব নমুনায় এজিপ্টাই ও এলবোপিক্টাস দুই প্রজাতির লার্ভা পাওয়া গেছে। যার মধ্যে এজিপ্টাই মশার লার্ভাই বেশি। দুটো মিলে ডেঙ্গু ছড়াতে থাকলে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে বলছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান বলেন, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা গিয়েছে। এতে রাজশাহীতে সচেতনতার অংশ হিসেবে সিটি করপোরেশনের কিছু জায়গায় ৭৫টি বাড়িতে নমুনা সংগ্রহ করে ২৮টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাই। অফিস-বাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনায় ৩৮ শতাংশ বাড়িতে লার্ভা পাওয়া গেছে। এমন একটি রিপোর্ট রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়রকে দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী সিটি যেহেতু অনেক বড় এলাকা। তাই মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করে তার সহযোগিতায় আরও ব্যাপকভাবে পরীক্ষা চালানো হবে।
তিনি আরও বলেন, রাজশাহী সিটি মেয়রকে লিখিত পরামর্শ দিয়েছি যাতে করে সিটিতে নতুন করে মশার লার্ভা না জন্মায়। যাতে করে পানি না জমে থাকে। এর জন্য মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানান জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য বলা হয়েছে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা সেলিম রেজা রঞ্জু বলেন, সাস্থ্য অধিদপ্তরের চিঠি পাওয়ার পর মশার বংশবিস্তার রোধ, পরিচ্ছন্নতা ও জনসচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করেছে সিটি করপোরেশন। শুরু হয়েছে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম। রাসিকের পুনর্নির্বাচিত মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় মসজিদে লিফলেট বিতরণ ও খুবতায় এসব বিষয়ে বলা, প্রাইমারি ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লিফলেট বিতরণ ও শিক্ষকদের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক ব্রিফ দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া অধিক সচেতনতার জন্য ইতোমধ্যে মাইকিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নকর্মী ও মশকনিধন কর্মীরা কার্যক্রম চালাচ্ছে।
রামেক হাসাপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহম্মদ বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্তদের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডটিকে ডেডিকেটেড করা হয়েছে। এছাড়া ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় ৫ সদস্যের মেডিকেল টিমও গঠন করা হয়েছে।
এটিভি/এস