নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি লেক থেকে পলিথিন ব্যাগে মোড়ানো এক শিল্পপতির ৪ টুকরা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল (১৩ নভেম্বর) বুধবার দুপুরে উপজেলার পূর্বাচল উপশহরের কুড়িল-কাঞ্চন সড়কের উত্তর পাশে ৫ নম্বর সেক্টর থেকে ৩টি পলিথিন ব্যাগে লাশের খণ্ডাংশ উদ্ধার করা হয়। পরে মধ্যরাতে দাড়ি, নখ ও পায়ের কিছু চিহ্ন দেখে মরদেহ শনাক্ত করেন স্বজনরা।
নিহত জসিম উদ্দিন মাসুম (৫৯) একজন শিল্পপতি। তিনি রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। জড়িতদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য মিলেছে।
নিহতের বড় ছেলে ওবায়দুল ইসলাম শিবু বলেন, দাড়ি, নখ ও বাঁ পায়ের কিছু চিহ্ন দেখে বাবার মরদেহ শনাক্ত করি। গত ১০ নভেম্বর বিকেল থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় গুলশান থানায় একটি জিডিও করেছি। সেরা করদাতা হিসেবে আমার বাবা একাধিকবার কর বাহাদুর পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি একজন শিল্পপতি। চাঁদ ডায়িং ফ্যাক্টরিসহ আমাদের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাবার সঙ্গে কারও শত্রুতা রয়েছে বলে জানা নেই।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১০ নভেম্বর বিকেলে বাসা থেকে গাড়িতে করে বের হয়ে গুলশান যান জসিম উদ্দিন। এরপর ব্যক্তিগত গাড়িচালককে ছেড়ে দেন। চালককে জানিয়েছিলেন অন্য গাড়িতে নারায়ণগঞ্জের কারখানায় যাবেন। তবে রাতে বাসায় না ফেরায় ও মোবাইল বন্ধ থাকায় পরদিন গুলশান থানায় জিডি করেন তাঁর বড় ছেলে।
জিডির তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই মো. রাশেদ গণমাধ্যমকে বলেন, শিল্পপতি জসিম উদ্দিনের সর্বশেষ লোকেশন কাফরুলে দেখা গিয়েছিল। এর পর আর তাঁর কোনো খোঁজখবর পাওয়া যাচ্ছিল না।
একাধিক ব্যক্তি এই হত্যায় জড়িত। ঢাকায় কোনো একটি বাসায় হত্যার পর তাঁর মরদেহ রূপগঞ্জে নিয়ে ফেলা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের মধ্যে একজন নারী থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বুধবার রাতে সন্দেহভাজন কয়েকজনকে গ্রেপ্তারে বেশ কয়েকটি জায়গায় অভিযানও চালিয়েছে পুলিশ।
রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী বলেন, ওই ব্যক্তি অন্তত তিন দিন আগে মারা গেছেন বলে ধারণা করছি। হত্যার পর তাঁর দেহের বিভিন্ন অংশ কেটে টুকরা করে পলিথিন ব্যাগে ভরে লেকে ফেলে দেওয়া হয়। তাঁর শরীরের দুটি অংশ এখনও পাওয়া যায়নি। আমরা যথাসম্ভব খুঁজেও পাইনি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে থানা পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে সিআইডি ও পিবিআই সদস্যরা আলামত সংগ্রহ করেছেন। খণ্ডিত টুকরা পচে-গলে যাওয়ায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট থেকে মরদেহ শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। পরে জিডির সূত্র ধরে মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত হয়।