atv sangbad

Blog Post

শিক্ষার মান উন্নয়নে এই কোচিং ব্যবসাকে পরিহার করতে হবে : রাষ্ট্রপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, এটিভি সংবাদ 

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, এক শ্রেণীর অসাধুচক্র ও কতিপয় বিপথগামী শিক্ষক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কোচিং সেন্টারের নামে রমরমা ব্যবসা করছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে এই কোচিং ব্যবসাকে পরিহার করতে হবে। এসময় শিক্ষার্থীদেরকে বিশ্বমানের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলার ও তাগিদ দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে “বিশ্ব শিক্ষক দিবস” উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব বলেন।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের জ্বালিয়াতি থেকেও উত্তরণ ঘটাতে সরকার, মন্ত্রণালয়, শিক্ষক, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। শিক্ষাদান পদ্ধতি আন্তর্জাতিক মানসম্মত করার পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ব প্রতিযোগিতায় সাফল্যের সাথে এগিয়ে যেতে পারে । আমরা চাই দেশের প্রতিটি শিক্ষার্থী সুশিক্ষিত ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠুক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখুক। ছেলেমেয়েদের প্রতিভা বিকাশের পথ দেখাতে সকল শিক্ষক ও অভিভাবকদেরকে সচেষ্টা হওয়ারও পরামর্শ দেন রাষ্ট্রপতি। ছেলেমেয়েদের জিপিও-৫ পাইয়ে দেয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং জিপিএ ৫ পেয়েও মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির নূন্যতম যোগ্যতা অর্জন করতে না পারারও কঠোর সমালোচনা করেন।

তিনি আরও বলেন, দেশের সমাজ ব্যবস্থায় এখনও শিক্ষকদের সম্মান ও মর্যাদা অন্য যে কোনো পেশার তুলনায় অনেক ঊর্ধ্বে। কিন্তু এই সামাজিক অবক্ষয়ের যুগে কিছুসংখ্যক বিপথগামী শিক্ষকের জন্য গোটা শিক্ষক সমাজের সম্মান ও মর্যাদা ক্ষুন্ন হতে পারেনা।

তিনি সম্মাননাপ্রাপ্ত সকল গুণী শিক্ষককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, শিক্ষকগণ আধুনিক, বিজ্ঞানমনস্ক এবং উন্নত জীবনবোধ ও নেতৃত্ব গুণসম্পন্ন নাগরিক তৈরির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে অবদান রেখে যাবেন ।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষক বিদেশে গিয়ে কতটুকু প্রশিক্ষণ নেন এবং দেশে ফিরে ক্লাসরুমে এর কতটুকু প্রয়োগ করেন সে বিষয়টিও মনিটরিং করতে করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেন।

শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সমাজ গঠনে ও দেশের সার্বিক উন্নয়নে আপনাদের কার্যকর ভূমিকা অপরিহার্য। আপনারা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ন্যায়-অন্যায়, সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য বুঝাবেন, মানবসেবা ও দেশপ্রেম এবং পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার শিক্ষা প্রদান করবেন। শিক্ষার্থীদের সাথে পিতা-মাতাতুল্য আচরণ করবেন। শাসন করবেন, কিন্তু শাস্তি নয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষকদের প্রতি গভীর মমত্ববোধ এবং দেশের উন্নয়নে শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করে ১৯৭৩ সালে একদিনে একযোগে ৩৬,১৬৫ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছিলেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

রাষ্ট্রপতি সরকারের পাশাপাশি শিক্ষক, অভিভাবক ও সুধীজনদেরকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লেখাপড়ার মানোন্নয়নে এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় শহর-গ্রামের বৈষম্য নিরসনে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়ার ও আহ্বান জানান।

শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনির সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ইউনেসকো ঢাকা অফিসের প্রতিনিধি ড. সুসান ভাইজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, ঢাকা গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরী হাই স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক ইসমত আরা মমতাজ এবং খিলগাঁও শান্তিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক পল্লব কুমার ভৌমিক।

“কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার জন্য শিক্ষক: শিক্ষক স্বল্পতা পূরণে বৈশ্বিক অপরিহার্যতা”-বাস্তবাতাকে সামনে রেখে বিশ্বের সকল শিক্ষকের প্রতি সম্মান জানাতে প্রতি বছরের মতো এবারও পালিত হচ্ছে “বিশ্ব শিক্ষক দিবস”। এই দিনে বিশ্বের সকল শিক্ষককে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি। অনুষ্ঠানে “বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৩” এর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে সাতজন কৃতি শিক্ষককে সম্মাননা দেয়া হয়।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ব্রেকিং নিউজ :