অনুসন্ধানী প্রতিবেদক, এটিভি সংবাদ
নেত্রকোনা জেলা শহরের জয়নগর এলাকায় গড়ে ওঠা আধুনিক সদর হাসপাতালটি শুধু নামেই আধুনিক। জনবলসহ নানা সংকটে থাকা এ হাসপাতাল স্থানীয়দের কাছে পরিচিত ‘রেফার্ড হসপিটাল’ হিসেবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আধুনিক সদর হাসপাতাল। ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়।
কিন্তু এর জন্য প্রয়োজনীয় জনবলসহ অবকাঠামোগত সুবিধা তেমন বৃদ্ধি করা হয়নি। রয়েছে আরও নানা সমস্যা। সময়ের ব্যবধানে আউটডোরে জর-সর্দি-মারামারি-দুর্ঘটনায় আহতসহ জরুরি সেবার জন্য রোগী বাড়লেও চিকিৎসক থাকেন না প্রায় সময়। সেই সঙ্গে রোগী ও স্বজনদের রয়েছে নানা অভিযোগ।
বাইরে থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাসহ সব ওষুধ কিনে আনতে হয়। অথচ হাসপাতাল থেকে স্লিপ নিয়ে ওষুধ নিয়ে যান প্রভাবশালীরা। রাতের বেলায় বিদ্যুৎ না থাকলে ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করে। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার অফিস চলার সময় বাইরে থাকেন বলেও অভিযোগ ওঠে সম্প্রতি এক সভায়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৪৩টি মঞ্জুরিকৃত পদের মধ্যে ১৮টি পদ শূন্য। অন্যান্য জনবল ৫০ জনের থাকলেও ২৪টিই শূন্য। সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ, টেকনোলজিস্ট থাকার পরও রোগীদের পাঠানো হয় বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। নাগরিক ফোরামের নেতা উদীচীর সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খান বলেন, রাতে অসুস্থ কাউকে নিয়ে গেলেই পড়তে হয় ভোগান্তিতে। চিকিৎসক পাওয়া যায় না খুঁজে।
বেশির ভাগ রোগীকেই রেফার্ড করা হয় ময়মনসিংহ মেডিকেলে। হাসপাতালে জেনারেটর থাকলেও তেল বরাদ্দ না থাকায় গরম কিংবা রাতে বিদ্যুৎ গেলেই ভূতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাফসা ইসলাম জানান, ভর্তি করা রোগী নতুন চাদর চাইলেই দায়িত্বরতদের দিতে হয় টাকা। ইনজেকশন পুশ করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। হেলথ ওয়াচ যুব ফোরামের আজিজুর রহমান সায়েম জানান, লাশ নিয়ে এলে নিজেদের বরফ কিনে এনে দিতে হয়। সকাল থেকে হাসপাতালের সামনে ইজিবাইক রিকশা ও রিপ্রেজেন্টেটিভদের গাড়িতে ভর্তি থাকে। রোগী নিয়ে বের হতেও সময় লাগে দীর্ঘ। প্রত্যন্ত গ্রামের রোগীদের চাপ। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু সাঈদ মো. মাহবুবুর রহমান জানান, তেল বরাদ্দ না থাকায় জেনারেটর অন করা যায় না। এ ছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাসহ অন্যান্য ব্যবস্থা অত্যন্ত ভালো।