ক্রীড়া ডেস্ক, এটিভি সংবাদ
২০১৮ সালে এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ দল। সেই জয় ছাপিয়ে আলোচনায় ছিল মুশফিকুর রহিমের নাগিন ড্যান্স। এরপর গেল বছর বিশ্বকাপে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে টাইমড আউট করা নিয়ে শুরু হয় জল্পনা-কল্পনা। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ মানেই এখন বাড়তি উন্মাদনা। বাঘ আর সিংহের এই লড়াই যেন মর্যাদার। এবার নিজেদের ঘরের মাঠে সেই লঙ্কানদের বিপক্ষে নামতে যাচ্ছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় ম্যাচটি শুরু হবে। ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে দুই দলের প্রতিনিধিই শোনালেন হাল না ছাড়ার বাণী। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে লঙ্কান কোচ ক্রিস সিলভারউড বলেন, ‘খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সিরিজ হবে। দুটি দলই ভালো। অতীতে যা হয়েছে, আমার কাছে তা ইতিহাস। সেটা পেছনেই চলে গেছে। সামনে বিশ্বকাপ আছে, তাই নিজেদের প্রস্তুত হতে হবে। প্রত্যেক দলই এখন চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরাও বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিচ্ছি। যেটা বললাম, খুবই রোমাঞ্চকর একটা সিরিজের আশা করছি। দুই দলেই আছে কয়েকজন ভয়ংকর ক্রিকেটার। তাই দারুণ মজা হবে।’
এই সিরিজে ফেভারিট কে, এমন প্রশ্নের জবাবে লঙ্কার এই কোচ রাখলেন নিজেদের এগিয়ে, ‘আমি তো বলব শ্রীলঙ্কাই ফেভারিট। তবে যা বললাম, দুই দলই খুব ভালো। সিরিজ জেতা তাই অনেক কঠিন হবে। আমরা সেরা ক্রিকেট খেলতে চাই।’
এদিকে বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত বলছিলেন, ‘আমার মনে হয় সবার আগে দলের কথা চিন্তা করা। যখন ক্যাপ্টেন ছিলাম সবসময় চিন্তা ছিল কীভাবে দলে ইনপুট দিতে পারি। আমার মনে হয় এটা এখন আরও ভালোভাবে সহায়তা করবে। আমি ক্যাপ্টেন, অনেক কিছু একা করতে হবে এমন করে ভাবছি না। যার যার দায়িত্ব সবাই পালন করলে আমার কাজ সহজ হয়ে যাবে।’
অধিনায়ক শান্ত নিজেকে নিয়ে আলাদাভাবে ভাবছেন না। একইসঙ্গে জানালেন দলে এমন খেলোয়াড় আছে যারা একাই ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা রাখে, ‘আলাদাভাবে চিন্তা করছি না, আমি ক্যাপ্টেন আমাকে অনেক কিছু করতে হবে। দলের সবাইকেই যার যার কাজটা ঠিকভাবে করতে হবে। তাহলে আমার জন্য সহজ হবে। নিজের দলকে নিয়ে বেশ আশাবাদী শান্ত। সেটাও প্রকাশ পেল তার কথাতেই, এখানে যারা আছে সবাই ভালো অবস্থানে আছে, আশা করি সবাই ভালো করবে এই সিরিজে। আমাদের টিমে যে ৫-৬টা বোলার আছে, সবাই অভিজ্ঞ ও দক্ষ। আমার মনে হয় তারা একাই ম্যাচ জিতিয়ে দিতে পারে।
মুখোমুখি লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত এগিয়ে লঙ্কানরাই। বাংলাদেশের চার জয়ের বিপরীতে তারা জয় পেয়েছে ৯ ম্যাচে। এছাড়া বাংলাদেশের বিপক্ষে কখনোই টি-২০ সিরিজ হারতে হয়নি তাদের। এবার অবশ্য ঘরের মাঠে এমন দুর্ভাগ্য কাটাতে চাইবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ স্কোয়াড :
নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন দাস, এনামুল হক বিজয়, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, তাওহিদ হৃদয়, সৌম্য সরকার, শেখ মাহেদী হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাইজুল ইসলাম, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব ও জাকির আলি অনিক।
শ্রীলঙ্কা স্কোয়াড :
হাসারাঙ্গা ডি সিলভা (অধিনায়ক, শেষ টি-টোয়েন্টি), চারিথ আসালঙ্কা (অধিনায়ক, প্রথম দুই টি-টোয়েন্টি), কুশল মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, দাসুন শানাকা, মহেশ থিকশানা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, নিরোশান ডিকবেলা, দিলশান মাদুশঙ্কা, নুয়ান থুশারা, মাথিশা পাথিরানা, আকিলা ধনাঞ্জয়া, বিনুরা ফার্নান্দো, কামিন্দু মেন্ডিস, আভিস্কা ফার্নান্দো ও জেফরি ভান্ডারসে।
টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে ওয়ানডেতে সফরকারীদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলবে টাইগাররা। তিন দিনের বিরতি দিয়ে চট্টগ্রামে দুই দল নামবে ৫০ ওভারের লড়াইয়ে। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে মাঠে গড়াবে ১৩ মার্চ। এরপর ১৫ ও ১৮ মার্চ হবে শেষ দুই ওয়ানডে।
চট্টগ্রাম যাত্রা শেষে দুদল আবার ফিরবে সিলেটে। সেখানে ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট। তিন দিনের বিরতি দিয়ে দুদল আবার চট্টগ্রামে ফিরে মুখোমুখি হবে দ্বিতীয় টেস্ট ৩০ মার্চ থেকে। টেস্টে দুই ম্যাচের সিরিজ খেলবে শান্ত-আসালাঙ্কারা।
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্গার সিরিজগুলো বাংলাদেশে টি স্পোর্টস ও গাজী টিভি সরাসরি সম্প্রচার করবে সিরিজটি। এ ছাড়া অনলাইনে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে র্যাবিটহোল ও টি স্পোর্টস অ্যাপে। অন্যদিকে, ভারতে দেখা যাবে ফ্যানকোডে। আর শ্রীলঙ্কায় সরাসরি উপভোগ করা যাবে সিয়াথা টিভিতে। এ ছাড়া দেশটিতে অনলাইনে ডায়ালগ টিভিতে সম্প্রচার করা হবে সিরিজটি।