নিউজ ডেস্ক, এটিভি সংবাদ :
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘হল সুপারভাইজার’ পদে শর্ত ভঙ্গ করে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ইউজিসির কাছে অভিযোগ প্রমাণিতও হয়েছে। হল সুপারভাইজার পদে নিয়োগটি ত্রুটিপূর্ণ আখ্যা দিয়ে, এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটকে চিঠি দিয়েছে ইউজিসি।
জানা যায়, ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য পদের পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা হলের জন্য হল সুপারভাইজার পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে পদটির জন্য আবেদনকারীদের সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, শিক্ষাপ্রশাসনে প্রশাসনিক কাজে ৩ বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা বলা হয়। গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮২তম সিন্ডিকেটে সোহেল রানা নামে এক ব্যক্তি নিয়োগ পান। তিনি ত্রিশালের আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের গুজিয়াম আলিম মাদ্রাসা থেকে কম্পিউটার অপারেটর কাম হিসাব রক্ষক (খণ্ডকালীন) কাজের অভিজ্ঞতার সনদ দাখিল করেন।
রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে তালিকা সংগ্রহ করেন জাহানারা মুক্তা নামে এ পদে অপর এক আবেদনকারী। তাতে দেখা যায়, সোহেল রানা দুই বছর এক মাসের অভিজ্ঞতার সনদ দাখিল করেছিলেন।
আবেদনে মন্তব্যের কোঠায়, ‘আবেদনের (ক) শর্ত পূরণ করেননি’ মর্মে উল্লেখ ছিল। তা সত্ত্বেও সোহেল রানার নিয়োগ হয় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা হলে। মেয়েদের হলে পুরুষ হল সুপারভাইজার নিয়োগ দেওয়াসহ নানা অসঙ্গতি নিয়ে ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন মুক্তা। তিনি একই পদে চাকরিপ্রার্থী এবং কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। তিনি শিক্ষামন্ত্রী ও ইউজিসির উপপরিচালক বরাবর নিয়োগ জালিয়াতির বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিজ্ঞতা সনদটি যাচাইয়ের জন্য ২৯ ফেব্রুয়ারি গুজিয়াম আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে চিঠি দেয় মঞ্জুরি কমিশন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুনের দেওয়া জবাবে ইউজিসির বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয়েছে, প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সুপারভাইজার পদে নিয়োগটি ত্রুটিপূর্ণ।
চিঠিতে বলা হয়, সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত খাত হতে সম্মানি দেওয়া হয় এমন খণ্ডকালীন কাজের অভিজ্ঞতার সনদের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত, স্থায়ী পদের বিপরীতে জনবল নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ আছে কিনা সেটি বিবেচ্য।
অভিযোগকারী জাহানারা মুক্তা বলেন, অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে জাল সনদে সোহেল রানাকে নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এজন্যই বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করে ইউজিসি বরাবর অভিযোগ করেছি। তবে সোহেল রানার দাবি, তিনি গুজিয়াম আলিম মাদ্রাসায় কমম্পিউটার অপারেটর কাম হিসাবরক্ষক (খণ্ডকালীন) হিসাবে কাজ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর গনমাধ্যমকে বলেন, ইউজিসির কথামতো আমরা বিষয়টি সিন্ডিকেটে নিয়ে যাব। বিজ্ঞ সদস্যরা যে সিদ্ধান্ত দেবেন, তাতে যদি কারও চাকরি চলে যায় যাবে, কারও চাকরি থাকলে থাকবে। নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছি, কারও প্রতি আমাদের আলাদা পক্ষপাত নেই।
Copyright © 2023 Atv Sangbad (A Concern of Aparadh Anusondhan Ltd) All rights reserved