শুকতারা ইসলাম ঐশী, এটিভি সংবাদ
রাজধানীর উত্তরা ১৩ নং সেক্টরস্থ লেকপাড় ব্রীজ সংলগ্ন চটপটি-ফুচকা দোকানদারের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে।
হামলার শিকার গুরুতর আহত ফুরকান মিয়া এটিভি সংবাদের প্রতিবেদককে বলেন, শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকাল আনুমানিক ৪ ঘটিকার সময় আমার পাশে অবস্থিত চটপটি-ফুচকা ব্যবসায়ী শামীম, রাজীব, রাসেল, রানা ও সুজনসহ অজ্ঞাত বেশ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র সু-সজ্জিত হয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসে এবং এলোপাতাড়িভাবে মারতে থাকে।
ফুরকান বলেন, আমি অপ্রস্তুত হয়ে পড়ি এবং চিৎকার দিলে রাজীব ও রানা আমাকে ঝাপটে ধরে। এ সময় শামীম তার হাতে থাকা রড দিয়ে আমার মাথায় সজোরে আঘাত করে। এতে আমার মাথা ফেটে অঝরে রক্ত ঝরতে থাকে।
ঘটনা চলাকালীন সময়ে দিশেহারা চা বিক্রেতা আমার স্ত্রী হাসিনা এগিয়ে এলে আসামিরা আমার স্ত্রীকেও মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফুলা জখমের সৃষ্টি করে।
এক পর্যায়ে তারা আমার দোকানের ক্যাশ বাক্সে থাকা ২০ (বিশ) হাজার টাকা ও আমার স্ত্রীর গলার থাকা স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
দোকানের সামনে আমাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পথচারী ও কিছু দোকান কর্মচারী মিলে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার মাথায় ৮টি সেলাই ও প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়।
আহত ফুরকান মিয়া বলেন, পরবর্তীতে আমি ও আমার স্ত্রী কিছুটা সুস্থ হলে উত্তরা পশ্চিম থানায় হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করি।
এদিকে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।
এটিভি সংবাদকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফুরকানের অভিযোগের ভিত্তিতে কথা হয় অভিযুক্ত শামীমের সাথে। এটিভি প্রতিবেদককে শামীম বলেন, আমরা অনেকদিন যাবত পাশাপাশি থেকে একই ব্যবসা করে যাচ্ছি। কোন সমস্যা হচ্ছে না অথচ প্রায়ই কাস্টমার নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। শামীম বলেন, ঘটনার দিন (২ সেপ্টেম্বর) উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং এক পর্যায়ে আমি ফুরকানের সামনে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ফুরকান আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়।
আমাকে ধাক্কা মারার ঘটনাটি আমার কর্মচারীরা দেখতে পেলে তারা আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয। এ সংঘর্ষে আমি এবং আমার কর্মচারীরাও আহত হয়েছে। আমার শরীরেও সেলাই পড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই জানান, এরা সবাই আত্মীয়-স্বজন এবং একই এলাকার। দোকান বসানোর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে শত্রুতার সৃষ্টি হয়। যা পরবর্তীতে হামলায় রূপ নেয়।
অনুসন্ধানে জানা যায় এরা প্রত্যেকে আত্মীয়-স্বজন এবং একই এলাকার। অনেক বছর যাবত তারা উত্তরার একই এলাকায় চটপটি-ফুচকার ব্যবসা করে আসছে। হঠাৎ করে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি স্থানীয়দের মনে প্রশ্নের উদয় হয়েছে।
উল্লেখিত ঘটনাটি স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত সাপেক্ষে উভয়কে নিয়ে একটি সমঝোতার সৃষ্টি করবেন এমনটি প্রত্যাশা করছেন ক্ষুদ্র এ সকল ব্যবসায়ীরা।