চট্টগ্রাম প্রতিবেদক, এটিভি সংবাদ
চার দফা দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের একটি আবাসিক হলের কার্যালয়ে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে আলাওল হলে এ ঘটনা ঘটে। তালা দেওয়া শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপপক্ষ ‘বিজয়’-এর নেতা-কর্মী হিসেবে পরিচিত।
তবে বেলা দুইটার দিকে দুই আবাসিক শিক্ষক দাবিগুলো পূরণের আশ্বাস দিলে তালা খুলে দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো, পানির সমস্যার সমাধান ( সুপেয় ও গোসলের পানি), ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা (ওয়াই-ফাই) নিশ্চিত করা, খেলার মাঠ বহিরাগতদের প্রভাব মুক্ত রাখা ও হলের নিরাপত্তা জোরদার করা।
দুপুর সাড়ে ১২টায় আলাওল হলে গিয়ে দেখা যায়, হল প্রাধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলছে। কার্যালয়টির ভেতরে চারজন কর্মকর্তা ও একজন পানির লাইন মেরামত করার মিস্ত্রি আটকা পড়েছেন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হলের ফটকের সামনে জড়ো হয়ে ‘পানির সমস্যার সমাধান করতে হবে করতে হবে’, ‘ওয়াই-ফাই সুবিধা, দিতে হবে দিতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছেন।
জানতে চাইলে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মামুন মিয়া বলেন, এক মাস ধরে হলের ওয়াই-ফাই সুবিধা নেই। এ ছাড়া সুপেয় পানির অভাব রয়েছে। পুরো হলে মাত্র একটি ফিল্টার। সেটিও বেশির ভাগ সময় নষ্ট থাকে।
ট্যাপের পানিও সব সময় থাকে না উল্লেখ করে সমাজতত্ত্ব বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ জন্য শৌচাগার ব্যবহারে বিব্রত হতে হয়। এ ছাড়া হলের খেলার মাঠ বেশির ভাগ সময় বহিরাগতদের দখলে থাকে। তাঁরা ভোর থেকেই এ মাঠে খেলাধুলা করেন। এ কারণে হলের শিক্ষার্থীদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এসব নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বললেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে আলাওল হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ ফরিদুল আলম বলেন, বজ্রপাতের কারণে রাউটার জ্বলে গিয়েছিল। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় অপটিক্যাল ফাইবারেরও সমস্যা হয়েছে। এ কারণে ব্রডব্যান্ড সেবা বন্ধ ছিল। কয়েক দিনের মধ্যে ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া পানির ফিল্টারও কয়েক মাস আগে নতুন লাগানো হয়েছে। যাঁরা কাজটি (তালা দেওয়া) করেছেন, তাঁরা খুব খারাপ করেছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাওল হলে তালা দেওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। গত বছরের ১৪ নভেম্বর হলের অব্যবস্থাপনা নিরসনের দাবিতে তালা দিয়েছিল ছাত্রলীগের এই পক্ষ।
ওই সময় তাঁরা শৌচাগার সংস্কার, সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা, পানির ট্যাংক মাসে ন্যূনতম একবার পরিষ্কার করা, গোসলের জন্য নির্মিত হাউস (ছোট সুইমিংপুল) নিয়মিত পরিষ্কার রাখা, পুরো হলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সেবা নিশ্চিত করা, হলের চারপাশ পরিষ্কার রাখা, চলমান সংস্কারকাজ দ্রুত শেষ করা, হলের কর্মচারীদের কাজের তদারকি ও কাজের গাফিলতি হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন।
এটিভি/এস