রাজধানীর উত্তরায় ‘বাস র্যাপিট ট্রানজিট’ (বিআরটি) প্রকল্পের যে ক্রেন থেকে প্রাইভেটকারের ওপর গার্ডার পড়েছে সেটির সক্ষমতা ছিল ৫০ টন। কিন্তু দুর্ঘটনার সময় ক্রেনে যে গার্ডার ছিল সেটির ওজন ছিল প্রায় ৭০ টন। সেই ক্রেনটির ছিল না ফিটনেস, ক্রেনটি ছিল অনেক পুরাতন।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, থার্ড পার্টি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিল্ড ট্রেড ইঞ্জিনিয়ার লিমিটেড মাসিক ভাড়ার চুক্তিতে ক্রেনটি সরবরাহ করে। প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কর্মকর্তা গ্রেফতার রুহুল আমিন ও মার্কেটিং ম্যানেজার গ্রেফতার তুষার ক্রেনের ভাড়া, চুক্তি, ড্রাইভার নিয়োগ ও ক্রেনের ফিটনেস যাচাইসহ অন্যান্য দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।
ক্রেন থেকে গার্ডার পড়ে প্রাইভেট কারকে চাপা দেওয়ার ঘটনার সময় সেটি চালাচ্ছিলেন চালকের সহকারী (হেলপার) যার নাম রাকিব হোসেন। আর বাইরে থেকে তাকে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন মূল ক্রেনচালক আল আমিন। আজ এই দু’জনসহ ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ১০ জনকে গ্রেফতারের পর সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব।
খন্দকার আল মঈন জানান, ক্রেনের মূল চালক আল আমিনের হালকা গাড়ি চালানোর অনুমোদন থাকলেও ভারি গাড়ি চালানোর লাইসেন্স নেই। ২০১৬ সালে ক্রেন চালনার প্রশিক্ষণ নিয়ে দু–তিনটি নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করার পর ২০২২ সালের মে মাসে বিআরটি প্রকল্পে ক্রেন অপারেটর হিসেবে কাজ শুরু করেন। আর রাকিব তিন মাস আগে এ প্রকল্পের ক্রেন হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করে। তার ক্রেন চালনা করার কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ ছিল না। দুর্ঘটনার পর আল আমিন ও রাকিব ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।
গত সোমবার বিকালে উত্তরার জসীমউদ্দীন রোডে বিআরটি প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয় এবং দু’জন গুরুতরভাবে আহত হন।
উল্লেখিত ঘটনাটির সঠিক তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন, এটিভি সংবাদের সম্পাদক এস এম জামান।