নিউজ ডেস্ক, এটিভি সংবাদ:
গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনার তিনদিন পরও শিডিউল বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারেনি রেল। কমলাপুর থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলগামী প্রতিটি ট্রেনই ছাড়ছে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা দেরিতে। ভ্যাপসা গরমে দীর্ঘ অপেক্ষায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। কর্তৃপক্ষের স্বদিচ্ছার অভাবকে দায়ী করছেন তারা। এদিকে শিডিউল ঠিক হতে আরও এক দুদিন লাগবে জানিয়ে স্টেশন ম্যানেজার জানান, পুরানো সিগন্যাল পদ্ধতির কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা।
রোববার (৫ মে) সরেজমিনে দেখা গেছে, কমলাপুরের প্ল্যাটফরম জুড়ে মানুষের ভিড়। দীর্ঘ অপেক্ষায় চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ। কাঙ্ক্ষিত ট্রেনের জন্য কারও অপেক্ষা ৫ ঘণ্টার, কারও অপেক্ষা ছাড়িয়েছে ৮ ঘণ্টারও বেশি। উত্তরবঙ্গের ট্রেন ধূমকেতু, বুড়িমারী, রংপুর এক্সপ্রেস যাত্রীদের অপেক্ষা যেন শেষই হওয়ার নয়। দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত মানুষ। উপায় না পেয়ে শুয়ে পড়েন অনেকেই।
জহির নামে একযাত্রী জানান, তিনি প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করে আছেন এখানে। এখনও জানেন না তার ট্রেন কখন ছাড়বে। এ গরমে অপেক্ষা করতে করতে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
ভ্যাপসা গরমে দীর্ঘ অপেক্ষায় ভোগান্তি চরমে উঠেছে। শিশুদের নিয়ে বেশি বিপাকে অভিভাবকরা। বসার যায়গা সংকট আর মালপত্র নিয়ে ভোগান্তি দূর পথের যাত্রীদের।
পরিবার নিয়ে রংপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে কমলাপুরে অপেক্ষা করছেন নাইমুল। তিনি জানান, এ গরমে শিশু নিয়ে এতো সময় অপেক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ঠিকঠাক বসার জায়গা পর্যন্ত নেই। সঙ্গে থাকা মালামালের জন্য কোনো দিকে যাওয়ারও সুযোগ নেই। এ ভোগান্তি কখন শেষ হবে সেটাও জানেন না তিনি। কেবলই অপেক্ষা করছেন।
স্টেশনে আসার পর যাত্রীরা জানতে পারেন রংপুর এক্সপ্রেস ১০ থেকে ১২ থেকে ঘণ্টা দেরিতে ছাড়বে। বাকিগুলোর যাত্রাতেও দেরি ৫-৬ ঘণ্টা। এতে অনেকেই বাড়ির পথ ধরতে রওনা দেন বাস কাউন্টারে। কেউ আবার টিকিট ফেরত দিয়ে বুঝে নেন টাকা।
যাত্রীরা বলছেন, রেল কর্তৃপক্ষের একটু স্বদিচ্ছার অভাবেই তীব্র গরমে এই অসহনীয় দুর্ভোগ তাদের।
কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন ছিল, ডিজিটালের এই যুগে যাত্রীকে স্টেশনে নিয়ে আসার পর শিডিউল বিপর্যয়ের খবর দেয়া থেকে মুক্তি দিতে কি করছেন তারা। একের পর এক নতুন রেলপথ আর বিলাসবহুল ট্রেন কি যাত্রী দুর্ভোগ কমাতে পারছে?
এমন প্রশ্নে রেলস্টেশনের ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার দায় চাপালেন টিকিট বিক্রির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সহজ ডটকমের ওপর।
তিনি জানান, এ বিষয়ে সহজ ডটকমকে নির্দেশনা দেয়া আছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ট্রেনের শিডিউলে কোনো পরিবর্তন এলে তা যেন গ্রাহকদের জানিয়ে দেয়া হয়। এ দায়িত্ব তাদের।
উল্লেখ্য, দেশের তিন হাজার কিলোমিটার রেলপথে ৪ ধরনের সিগন্যাল বিদ্যমান। যার ৮০ শতাংশই পুরানো অ্যানালগ পদ্ধতির।