নিউজ ডেস্ক, এটিভি সংবাদ
আগামী সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে বলে সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলকে আশ্বস্ত করেছে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলটি বলেছে, সংবিধানের বর্তমান কাঠামোর আওতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।
গতকাল শনিবার রাজধানীর বনানীতে শেরাটন হোটেলে ইইউ দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, এখানে মূলত একটা ব্যাপারে আমাদের অঙ্গীকার তাদের (ইইউ) চাওয়া।
সেটা হচ্ছে– বাংলাদেশে তারা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চায়। আমরাও বলেছি, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই এটা সম্ভব। বৈঠকে সংবিধানের বাইরে গিয়ে অন্য কোনোভাবে নির্বাচনের কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান, সার্বভৌমত্ব ও আইনি ব্যবস্থার ওপর ভিত্তি করে ইইউ একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারে তারা আশ্বস্ত হয়েছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এর বাইরে বৈঠকে কী কী আলোচনা হয়েছে, সেটা নিয়ে আমরা বলতে চাই না। তাদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে অনেক কথাই হয়েছে।
দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দিনব্যাপী ধারাবাহিক আলোচনার অংশ হিসেবে এদিন দুপুর ১২টায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠকে বসে ঢাকা সফররত ইইউ প্রতিনিধি দল। প্রায় দেড় ঘণ্টার এই বৈঠকে আগামী নির্বাচন ও ইইউর পর্যবেক্ষক দল পাঠানোসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে।
বৈঠকে ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত ও অ্যাডভোকেট তারানা হালিম।
অন্যদিকে, ইইউ প্রতিনিধি দলের প্রধান সেলোরি রিকার্ডোর নেতৃত্বে প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের বাকি চার সদস্যও বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠক শেষে ইইউ প্রতিনিধি দলটি উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি। তবে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের নেতা ওবায়দুল কাদের শেরাটন হোটেলের লবিতে প্রেস ব্রিফিং করেন।
‘আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার সুযোগ নেই’– ইইউ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের সঙ্গে কী কথা হয়েছে, আমরা বললাম। বিএনপির সঙ্গে কী কথা হয়েছে, তা নিয়ে আমরা কেন বিতর্ক করতে যাব? সেটা তাদের ব্যাপার।
বিরোধ অবসানে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি বৈঠকের আলোচনায় আসেনি বলে জানান ওবায়দুল কাদের। এমনকি তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা সংসদ বিলুপ্তির বিষয় নিয়েও কোনো কথা বলেননি তারা।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান ও বিধিবিধান অনুসারে আগামী নির্বাচন হবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন হবে। এখানে সংসদ বিলুপ্তির প্রশ্নই ওঠে না। সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারেরও প্রশ্ন ওঠে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের কোনো ধরনের ব্যত্যয় আমরা মানব না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আগামী নির্বাচন হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে ইইউ প্রতিনিধি দলের সন্তোষ বা অসন্তোষ প্রকাশের মতো কোনো কথা বৈঠকে হয়নি। তারা যেসব ইস্যু নিয়ে এসেছে, সেসব বিষয় নিয়েই কথা বলেছেন। নির্বাচনকালে ইইউর পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর বিষয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা– জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ নিয়েও কোনো কথা হয়নি বৈঠকে।
এটিভি/এস