আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এটিভি সংবাদ
ব্রিটিশ রাজা চতুর্থ এডওয়ার্ড মারা যান ১৪৮৩ সালে। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ৪০ বছর। কয়েকশ বছর ধরে তার মৃত্যু নিয়ে নানা ধরনের মতবাদ প্রচলিত ছিল। মনে করা হতো তিনি ম্যালেরিয়া বা বিষপ্রয়োগে মারা গেছেন। তবে মৃত্যুর ৫৪০ পর এক গবেষণায় বলা হচ্ছে, রাজা চতুর্থ এডওয়ার্ডের মৃত্যু হয়েছিল সিফিলিসের মতো একটি যৌন রোগে।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) দ্য মিররের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজা চতুর্থ এডওয়ার্ডের মৃত্যু নিয়ে কয়েকশ বছর ধরে নানা ধরনের মতবাদ প্রচলিত থাকলেও তার মৃত্যুর আসল কারণ সম্পর্কে কারোরই কোনো ধারণা ছিল না। মনে করা হতো ম্যালেরিয়ায় বা বিষপ্রয়োগে তার মৃত্যু হয়েছে।
৫৪০ বছর পর রাজার মৃত্যুর প্রকৃত কারণটি জানা গেছে বলে দাবি করা হচ্ছে। কিছু নথিপত্রের বরাত দিয়ে গবেষণায় বলা হয়েছে, রাজা চতুর্থ এডওয়ার্ডের মৃত্যু হয়েছিল সিফিলিসের মতো একটি যৌন রোগে। অনিয়ন্ত্রিত যৌনাচারের কারণে এই রোগটি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে সংক্রমিত হতে পারে। মধ্যযুগে ব্রিটিশদের মধ্যে এই রোগটি ছড়িয়ে পড়েছিল।
প্রচলিত তথ্য অনুযায়ী, চতুর্থ এডওয়ার্ডের মৃত্যুর ১০ বছর পর ১৪৯৩ সালে ক্রিস্টোফার কলম্বাস আমেরিকা ভ্রমণ করলে তার নাবিকদের মাধ্যমে ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জগুলোতে প্রথমবারের মতো যৌনবাহিত সিফিলিসের প্রাদুর্ভাব ঘটে। তবে নতুন গবেষণা বলছে, সিফিলিসের আদি রোগ ট্রেপোনেম্যাটোসিস প্রাচীনকাল থেকেই ইউরোপ এবং আফ্রিকাতে ছিল। এডওয়ার্ডের মৃত্যুর সঙ্গেও সিফিলিসের যোগসূত্র ছিল।
ইতিহাসবিদ মেরিলিন স্যালমন বলেছেন, কয়েকশ বছরের পুরোনো এমন কিছু নথি আবিষ্কৃত হয়েছে যেগুলোতে রাজা চতুর্থ এডওয়ার্ডের জীবনের শেষ সময়গুলোর পরিস্থিতি লিপিবদ্ধ আছে। নথিগুলোতে রাজার শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে এমন কিছু লক্ষণের বর্ণনা আছে যা থেকে বোঝা যায় তিনি সিফিলিস রোগটির শেষ পর্যায়ে ভুগছিলেন। রোগটির সংক্রমণ ঘটলে শরীরে এর লক্ষণ প্রকাশ পেতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে। চিকিৎসা না করালে শেষ পর্যন্ত এটি মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রকেও বিকল করে দিতে পারে।
এডওয়ার্ডের রাজ দরবার থেকে লেখা একটি নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজা ‘বৃদ্ধ ছিলেন না’ এবং তিনি এমন একটি রোগে ভুগছিলেন যা চিকিৎসকরা নির্ণয় করতে পারেননি। জীবনের শেষ কিছুদিন তিনি বিছানায় পড়েছিলেন এবং ৯ এপ্রিল মারা যান। এডওয়ার্ডের রোগের অস্বাভাবিক এসব অবস্থাকে সিফিলিস রোগের লক্ষণের সঙ্গেই তুলনা করেছেন মেরিলিন স্যালমন।
এটিভি/এস