জামালপুর (সরিষাবাড়ী) প্রতিবেদক, এটিভি সংবাদ
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি দীর্ঘ ১০ মাস পর অনুমোদন দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। পূর্ণাঙ্গ এ নতুন কমিটির কোনো পদে মুরাদ হাসান এমপির নাম রাখা হয়নি। এ নিয়ে নতুন আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে এ উপজেলায়। পক্ষে বিপক্ষে চলছে নানা আলোচনা।
জানা যায়, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে সরিষাবাড়ী অনার্স কলেজ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন ছানোয়ার হোসেন বাদশাকে সভাপতি ও হারুন অর রশীদকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করে দুই বছরের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করা হয়।জানা যায়, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে সভাপতি ও সম্পাদকের দ্বন্দে দীর্ঘ ১০ অতিবাহিত হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়নি। এ নিয়ে দলীয় পদপ্রত্যাশী ত্যাগী নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
অবশেষে বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ্রের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে এ কমিটিতে নাম নেই নানা সময়ের আলোচিত-সমালোচিত স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসক মুরাদ হাসান এমপি’র। নতুন এই কমিটিতে ডা. মুরাদ হাসানের নাম না থাকায় হতবাক তার সমর্থিত নেতাকর্মীরা। তারা এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। সেইসঙ্গে নতুন এই কমিটিতে মুরাদ হাসানের নাম অন্তর্ভুক্ত করার দাবিও জানান মুরাদ হাসান এমপির সমর্থকরা।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে দলীয় একাধিক নেতা জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে একাধিক বিএনপির সমর্থিত লোকদের নাম রাখা হয়েছে। একই পরিবারের তিন ভাই, ভাগ্নে, খালু ও আত্নীয়দের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসবের তীব্র নিন্দা ও বিতর্কিত ব্যাক্তিদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া জোর দাবি জানান তারা।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মুরাদ হাসান এমপি নাম না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাদশা বলেন, বিগত দিনে মুরাদ হাসান এমপির নানা কর্মকাণ্ডের কারণে তাকে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এসব কারণেই জেলা নেতৃবৃন্দ তাকে নতুন করে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেননি। সভাপতি সম্পাদকের দ্বন্দের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, কিছুটা রয়েছে। তবে সেটি পরিসমাপ্তি না হওয়ার মধ্যেই ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।দ্বন্দের বিষয়ে বক্তব্য নিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সংসদ সদস্য মুরাদ হাসান এমপির মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিয়েও তার বক্তব্যে পাওয়া যায়নি।জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন, সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগর ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখানে বিতর্কের কোনো স্থান নেই।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের নির্দেশ দেন। এই খবরে ৭ ডিসেম্বর তার নির্বাচনী এলাকা জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে আনন্দ মিছিল করেন আওয়ামী লীগসহ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এর পরে দলীয় সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় মুরাদ হাসান এমপিকে।
এটিভি/এস