ক্রীড়া ডেস্ক, এটিভি সংবাদ
আগের দিন যে চেয়ারটায় এসে মুমিনুল হক সৌরভ দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে গিয়েছিলেন, গতকাল সেখানে বসেই অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত একই সুর তুললেন। বললেন, ‘দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যাটারদের তেমন কোন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় না।’ অথচ চ্যালেঞ্জহীন ওই ঘরোয়াতেই জয়-জাকির-দিপুরা ব্যর্থ।
গতকাল শান্ত আরও বলেছেন, ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির উইকেটগুলোর মান ভালো করতে হবে। সিলেট কিংবা চট্টগ্রামে যে উইকেটগুলোতে খেলা হলো, সেগুলো লঙ্কানদের জন্য অপরিচিত হতে পারে, বাংলাদেশিদের জন্য তা মোটেই না। প্রশ্নটা থেকে যায় এখানেই– ঘরোয়া লিগে যারা মনোযোগ দিয়ে খেলে থাকেন এবং পারফর্মও করেন, তাদর কি টেস্ট স্কোয়াডে সুযোগ দেওয়া হয়?
এই যেমন ২০২৩-২৪ জাতীয় লিগে ব্যাটারদের তালিকায় ১০ নম্বরে ছিলেন জাকির হাসান, বিসিএলে ছিলেন ৩৬ নম্বরে। দুই ম্যাচ খেলে করেছিলেন ৪২ রান। আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় এনসিএলে চার ইনিংসে ৮৭ রান করে ছিলেন তালিকার ৭৭ নম্বরে। বিসিএলে দুই ইনিংস খেলে করেছিলেন ২৮ রান। ছিলেন তালিকার ৪৩ নম্বরে।
একই হাল শাহাদাত হোসেন দিপুরও। জাতীয় লিগে ১১৮ রান করে ৬২ নম্বরে ছিলেন তিনি, বিসিএলেও ৫৬ রান করে ছিলেন ২৯ নম্বরে। কেবল মুমিনুল হক নিষ্ঠার সঙ্গে ঘরোয়া এসব লিগ খেলে যান, পারফরম্যান্সেই তার প্রমাণ। বিসিএলে ৪৭৫ রান করে তিনি ছিলেন সবার ওপরে আর বিসিএলে এক ইনিংস খেলে ১১৭ রান করেছিলেন। স্কোয়াডে আরেক ওপেনার ছিলেন সাদমান ইসলাম অনিক। দু’বছর আগে সর্বশেষ টেস্ট খেলা এই ব্যাটার প্রায় প্রতিটি সিরিজেই দলের সঙ্গে থাকেন। অথচ গত ১২ টেস্টে তাঁকে একাদশেই দেখা যায়নি। সর্বশেষ এসসিএলে ৪৫৩ রান করে তৃতীয় ছিলেন কিন্তু বিসিএলে ছিলেন ৩৩ নম্বরে, করেছিলেন ৫১ রান।
এখন প্রশ্ন, ঘরোয়া লিগে যারা পারফর্ম করছেন, তাদের কেন টেস্টে সুযোগ দেওয়া হয় না? ওয়ানডে সিরিজে পারফরম্যান্সের কারণে লিটন দাসকে সিরিজের মাঝেই বাদ দিয়েছিলেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। এখন তিনি কি পারবেন সেই একই কারণে টেস্টে পারফর্ম না করে দিনের পর দিন স্কোয়াডে থাকা মুখগুলোকে বিশ্রাম দিতে?
চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সামনে পেয়ে বোর্ডের প্রতি আরও কিছু আর্জি রেখেছিলেন শান্ত। ভবিষ্যতে মূল টেস্টের আগে প্রস্তুতি ম্যাচ বা ‘এ’ দলের সিরিজ চেয়েছেন। অথচ চট্টগ্রাম টেস্টে ১৯২ রানে পরাজিত দলটির ‘শুধুই টেস্ট’ খেলা ক্রিকেটার পাঁচজন। মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির হাসান, মুমিনুল হক, শাহাদাত হোসেন দিপু আর খালেদ মাহমুদ। অর্থাৎ, একাদেশের বেশির ভাগই টেস্টের বাইরে অন্য ফরম্যাটে খেলে থাকেন। তাহলে টেস্টের জন্য তাদের প্রস্তুতিটা কী হবে?
সংবাদ সম্মেলনে এলেই শান্তকে লিটনের বাজে ফর্ম নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। অথচ তাদের নিজেরই টেস্ট পারফরম্যান্সই তলানিতে। গত ছয় ইনিংসে তাঁর সাকুল্যে রান ৫৬। শান্তর দাবি, যারা সব ফরম্যাট খেলছেন, তাদের নেটেও লাল বলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। তাহলে কি টেস্ট খেলার মানসিকতায় বিশাল ঘাটতি নিয়েই মাঠে নামছে বাংলাদেশ দল।