নিজের সব অপকর্ম ঢাকতে পুলিশের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহীর বাঘা সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা ও মাদক কারবারি রয়েলের বিরুদ্ধে। পুলিশ বলছে, তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মাদক ও চুরি মামলা। তবে রাজশাহী শহরে সংবাদ সম্মেলনে নিরাপরাধ দাবি করা আসামি রয়েলের ফেনসিডিল বিক্রির একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
রয়েলের অভিযোগ, পুলিশকে উৎকোচ না দেওয়ায় তার বাড়ির গেটের সামনে থেকে একটি মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছে। পক্ষান্তরে পুলিশের দাবি, আসামি রয়েল ও তার সহযোগী মাদক পাচারকালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুটি মোটরসাইকেল ফেলে মাদক নিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। এরপর মোটরসাইকেল দুটি পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
বাঘা থানা পুলিশের একজন মুখপাত্র জানান, গত ১৪ মে সকাল সাড়ে ১১টার সময় বাঘা থানা পুলিশের এসআই নুরুল ইসলাম পাকুড়িয়া এলাকায় ডিউটি করছিলেন। পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে শীর্ষ মাদক কারবারি রয়েল (২৬) ও তার সহযোগী পাকুড়িয়া গ্রামের বেলালের মোড় হতে দক্ষিণ-পূর্ব পাশে পদ্মা নদীতে নামার রাস্তায় দুটি মোটরসাইকেল ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। অতঃপর মোটরসাইকেল মালিকের সন্ধান না পাওয়া দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা এসআই নুরুল ইসলাম মোটরসাইকেল দুটি বিধি মোতাবেক জব্দ করে ডায়েরিভুক্ত করেন এবং পরদিন আদালতে প্রতিবেদন পাঠানো হয়।
এদিকে চিহ্নিত মাদক কারবারি ও চোরাকারবারী পলাতক আসামি রয়েল কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে উল্টো পুলিশের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। রাজশাহীর একটি প্রেস ক্লাবে গত ৭ জুন সকাল ১০টার সময় একাই উপস্থিত হয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে আলোচিত হন। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি বলেও সূত্র নিশ্চিত করেন।
বাঘা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম বলেন, আসামি রয়েল বাঘা থানার একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি। জোত কাদিরপুর (পানি কুমড়া) গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে। তিনি দুজন অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে যে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার কোনো ভিত্তি কিংবা সত্যতা নেই। ঐদিন পাকুড়িয়া এলাকায় আমি সঙ্গীয় ফোর্সসহ ডিউটি করছিলাম। অথচ আসামি রয়েল অপর একজন পুলিশ কর্মকর্তা এসআই শাহনেওয়াজ কেও অভিযুক্ত করে সংবাদ সম্মেলনে অনেক মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছেন।
বাঘা থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম জানান, মিথ্যে অভিযোগ করে কাউকে ফাঁসানো যায় না। রয়েল বাঘা থানার একজন তালিকাভুক্ত ও চিহ্নিত মাদক কারবারি। তার নামে থানায় একাধিক মাদক মামলাসহ অন্যান্য মামলা রয়েছে। ঘটনার দিন সে ভারতীয় সীমান্ত এলাকা থেকে ফেনসিডিল পাচার করছিল। গোপন সংবাদেরভিত্তিতে আমাদের অফিসার পাকুড়িয়া সীমান্ত এলাকায় অবস্থান নিলে সে এবং তার সহযোগী দুটি মোটরসাইকেল ফেলে রেখে মাদক নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ছাড়া রয়েলের নামে সর্বশেষ গত ১৭ মার্চ একশত বোতল ফেনসিডিল ফেলে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে বাঘা থানায় একটি মামলা হয়েছে। আর এসব মামলা থেকে বাঁচতে সে পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে একাই সংবাদ সম্মেলনসহ নানা কুৎসা রটাচ্ছে। এসব বিষয়েও তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন ওসি।