সৈকত মনি, এটিভি সংবাদ
আত্মবিধ্বংসী মূল্যবোধ প্রচারের কারণে আমাদের সভ্যতা গুরুতর বিপদের সম্মুখীন বলে সতর্ক করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, আমরা মানবজাতি নিজেরাই পৃথিবীর ধ্বংসের কারণ। এটি আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে করছি। আমরা এমন এক জীবনযাত্রা বেছে নিয়েছি, যা পরিবেশবিরোধী।
বাংলাদেশ সময় বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরের দিকে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জাতিসংঘের বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক কপ-২৯ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমি জলবায়ু সংকটের একটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করতে চাই। এই দৃষ্টিভঙ্গি ভবিষ্যতে আমাদের আরও বড় বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করবে। চলমান পদক্ষেপগুলো মাধ্যমে জলবায়ুর প্রতিকার একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়াও এসব পদক্ষেপ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপিত করে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নতুন সভ্যতা গড়তে আমাদের প্রয়োজন, মেধা, অর্থ এবং যুবশক্তির সমন্বয়। এর মাধ্যমে আমাদের সভ্যতার ভিত্তি স্থাপন করা যাবে। এছাড়াও আমাদেরকে নিজেকে সংরক্ষণ ও শক্তিশালী করতে সক্ষম হবে।
বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কাঠামোর দৃষ্টিভঙ্গির কারণে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা মানবজাতি নিজেরাই পৃথিবী ধ্বংসের কারণ। আমরা ইচ্ছাকৃতভাবেই পৃথিবীকে ধ্বংস করছি। কারণ, আমরা এমন একটি জীবনযাত্রা বেছে নিয়েছি, যা পরিবেশবিরোধী। এই জীবনযাত্রাকে আমরা একটি অর্থনৈতিক কাঠামোর মাধ্যমে বৈধতা দিচ্ছি, যা এখন পৃথিবীর স্বাভাবিক নিয়ম হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে। এই অর্থনৈতিক কাঠামো কোনো শেষ নেই। এটি ভোগের নীতির ওপর ভিত্তি করে চলে। যেমন, যত বেশি ভোগ, তত বেশি বৃদ্ধি। যত বেশি বৃদ্ধি, তত বেশি লাভ। মুনাফার সর্বাধিকীকরণকে মহাকর্ষের মতো একটি শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা পুরো সিস্টেমকে আমাদের ইচ্ছামতো পরিচালিত করতে সাহায্য করে।
গত সোমবার জলবায়ু সম্মেলন উপলক্ষ্যে আজারবাইজানে রাষ্ট্রীয় সফরে যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি সেখানে ১১ থেকে ১৪ নভেম্বর অবস্থান করবেন।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি ড. ইউনূসের দ্বিতীয় সফর। তার প্রথম সফর ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে, সেখানে জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেন তিনি।