নিজস্ব প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, আমাদের প্রধান কাজ জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়া। আপনারা পুলিশকে সহযোগিতা করুন, পুলিশও আপনাদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) মোহাম্মদপুরের রিং রোডের সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে পুলিশ, ছাত্র-জনতা ও মোহাম্মদপুর থানা এলাকার বাসিন্দাদের সমন্বয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশের ইমেজ বৃদ্ধিতে আমাদের প্রচেষ্টা চলমান। পুলিশ নিষ্ক্রিয় থাকলে চোর-ডাকাতের আতঙ্কে মানুষ যে ঘুমাতে পারে না তা মোহাম্মদপুরবাসী ৫ আগস্ট এর পর বুঝতে পেরেছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধ দমনে পুলিশকে সহযোগিতা করুন।
কমিশনার বলেন, মোহাম্মদপুরের চাঁদাবাজরা মোহাম্মদপুরেরই বাসিন্দা। সুতরাং আপনার প্রতিবেশী খারাপ মানুষটিকে আপনি প্রতিহত করুন। ফুটপাতের চাঁদাবাজ চক্রকে মনিটরিং করা হচ্ছে এবং দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
কমিশনার আরও বলেন, অটোরিকশা চালক প্রতিনিধিদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক হয়েছে। নাগরিকদের স্বার্থে অটোরিকশার প্রয়োজন আছে। তবে একইসঙ্গে অটোরিকশার সংখ্যা যাতে আর বৃদ্ধি না পায় সে ব্যাপারেও সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা অটোরিকশা বৃদ্ধিতে ঢাকা শহরে হাঁটার রাস্তা কমে যাচ্ছে।
রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে তিনি বলেন, মিছিল-মিটিং খোলা রাস্তার পরিবর্তে কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় যদি করা যায় তাহলে জনদুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হবে। রাস্তা অবরোধের চর্চা থেকে ধীরে ধীরে বের হয়ে আসতে হবে।
মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, মাদক নির্মূলে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ীদের কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না। রাষ্ট্র বিনির্মাণে ও সমাজ পরিবর্তনের জন্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাত বরণকারী সব শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে সব শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও আহতদের দ্রুত সুস্থতার জন্য মোনাজাত করা হয়।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছাত্র-জনতা ও মোহাম্মদপুর থানা এলাকার বাসিন্দারা ডিএমপি কমিশনারের কাছে তাদের বিভিন্ন মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরেন। ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত সবার কথা মনোযোগ গিয়ে শোনেন ও ডিএমপির পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান। সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. ইসরাইল হাওলাদার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান পিপিএম (বার), অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম; র্যাব-২ অধিনায়ক মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁঞাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নেতা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও ছাত্র আন্দোলনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।