মাদারীপুরে প্লানেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে সৈয়দা মাজেদা বেগম নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোগীর মৃত্যুর পর চিকিৎসক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান বলে দাবি করেছেন রোগীর স্বজনরা।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সকালে মাদারীপুর শহরের কলেজ রোড এলাকার প্লানেট হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। মৃত সৈয়দা মাজেদা বেগম ডাসার উপজেলার ডাসার গ্রামের মৃত নুর উদ্দীন আহম্মেদের স্ত্রী।
মৃতের স্বজনরা জানান, গত বৃহস্পতিবার বাড়ির সিড়ি থেকে নামার সময় পড়ে গিয়ে হাঁটুর জয়েন্টে আঘাত পায় মাজেদা বেগম। পরে পরিবারের লোকজন রাতে শহরের প্লানেট হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান। এ সময় এক্স-রে করানোর পরে দায়িত্ব থাকা চিকিৎসক মহসিনা খান (আইরিন) হাঁটুর অপারেশন করানোর কথা বলেন।
শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান তারা। সকাল ৯টার দিকে ওই চিকিৎসক রোগীকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে উন্নত চিকিৎসার জন্য এ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে দিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। এ সময় চিকিৎসক হাসপাতাল থেকে সটকে পড়েন। স্বজনরা রোগীর রিপোর্ট চাইলে হাসপাতাল থেকে জানানো হয় রোগী মারা গেছেন।
মৃত মাজেদা বেগমের ছোট ছেলে সৈয়দ মুনিম অভিযোগ করে বলেন, ‘হাসপাতালের চিকিৎসক আইরিনের গাফলতির কারণেই আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে। তিনি যদি না পারতেন তাহলে কেন আমার মায়ের অপারেশন করালেন। তাও অপারেশন করানোর মাঝেই আমার মাকে ওটি থেকে বের করে দিয়ে বলেন অন্য কোথাও নিয়ে যেতে। ঘটনা ঘটিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই তিনি পালিয়ে গেছেন।
মৃত মাজেদা বেগমের বড় ছেলে সৈয়দ আবুল কালাম বলেন, আমার মায়ের রিপোর্ট ভালো ছিল। ডাক্তার আইরিন অপারেশন রুমে নিয়ে, অপারেশন শেষ না করেই চলে যান। তারা তখনো বলেনি আমার মা মারা গেছে। তারা ২ ঘন্টা পরে এ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে ইসিজি করে বলেন মা মারা গেছেন। কোন দায়িত্বশীল লোক এগিয়ে আসেনি। আমার মায়ের মতো এভাবে যেন আর কাউকে মারা যেতে না হয় সে জন্য সরকার আর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নজর দেওয়া উচিৎ।
এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কথা বলতে রাজি হয়নি। চিকিৎসকও ঘটনার পর হাসপাতাল থেকে সটকে পড়েন।
সদর থানার ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সিভিল সার্জন ডা. মো. মুনির আহমেদ খান বলেন, আমি এখনো বিষয়টি শুনিনি। তবে এ ঘটনায় অভিযোগ এলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
প্লানেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মরত ডাক্তার আইরিনের গাফিলতির কারণে মাজেদা বেগমের মৃত্যু হয়েছে বলে জোরালো মন্তব্য করেন, এটিভি সংবাদের সম্পাদক এস এম জামান। তিনি বলেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন এবং তদন্তে প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।