মনির হোসেন জীবন, এটিভি সংবাদ :
মানবতা বিরোধী অপরাধে সরাসরি সম্পৃক্ত যুদ্ধাপরাধী এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি মোঃ আবুল খায়ের (৭০)’কে উত্তরা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১০ এর একটি চৌকস দল বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুর আনুমানিক ২ টার দিকে উত্তরা-পশ্চিম থানার ১৪ নং সেক্টর আহালিয়ার মাষ্টার গলি এলাকায় ঝটিকা অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। আজ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১, পাঠানো হয়েছে।
আটককৃত আসামী- নোয়াখালি জেলার কোম্পানিগঞ্জ থানার চর ফকিরা গ্রামের মৃত দানা মিয়ার পুত্র মোঃ আবুল খায়ের (৭০)। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ (বাংলাদেশ) কর্তৃক ইস্যুকৃত গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত যুদ্ধাপরাধী মামলার পলাতক আসামি।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে র্যাব-১০ এর উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নোয়াখালি এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে মোঃ আবুল খায়ের সহ অন্যান্য যুদ্ধাপরাধী রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা অপহরণ, নৃশংস হত্যাকান্ড সহ মানবতা বিরোধী অপরাধে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন যুদ্ধাপরাধী আবুলসহ অন্যান্য সশস্ত্র রাজাকার ও পাকিস্তানি আর্মি নিয়ে নোয়াখালি জেলার কোম্পানিগঞ্জ থানার বিভিন্ন এলাকায় বুদ্ধিজীবী ডঃ রমেশ চন্দ্র সেনকে হত্যা সহ স্বাধীনতাকামী মুক্তিযুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা সাতজনসহ মোট ১০ জন ব্যক্তিকে হত্যা করে । এলক্ষে ২০১৭ সালে ১২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কর্তৃক একটি মামলা যার কমপ্লেইন্ট রেজিঃ ক্রমিক-৮৭, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ (বাংলাদেশ) মিস. মামলা নং-০৪/২০২১ দায়ের করা হয়।
আমিনুল ইসলাম জানান, গত ২০২১ সালের ৫ ডিসেম্বর তারিখে যুদ্ধাপরাধী মোঃ আবুল খায়েরের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়। গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যুর পর থেকে আসামী দেশের বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে আত্মগোপনে চলে যায়।
র্যাব বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী ওই ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ত থাকার কথা অকপটে স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আরও জানান, গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু হওয়ার পর থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট থেকে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে আত্মগোপনে থাকতেন। গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।