মামুন হোসেন, পিরোজপুর, এটিভি সংবাদ
বাংলাদেশি যুবক হাছিবুরের লেখা কাব্যগ্রন্থে ”ফিলিস্তিনি কান্না” কবিতার বইতে ফুটে উঠলো ফিলিস্তিনি শিশুদের আহাজারি। রবিবার সকালে বইটির লেখকের সাথে আলাপকালে জানা যায়, মানব সভ্যতার ইতিহাসে যুদ্ধ এক আতঙ্কের কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি যখন বিশ্বকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তখন যুদ্ধ সভ্যতার সোনালী বুকে এঁকে দিচ্ছে বেদনার মরণ ছোবল। শান্তির এই পৃথিবীতে ভরে তোলা হচ্ছে অশান্তির দাবানলে। আজকের আগ্রাসী সাম্রাজ্যবাদী সভ্যতা তার মারণাস্ত্রের হোমানল প্রজ্বলিত করে চলেছে পারমাণবিক বোমা তৈরি করে। যুদ্ধের রণদামামায় পৃথিবী আজ ক্লান্ত। তথাকথিত মানবতাবাদী আর গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালারা মানবতা আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মিথ্যা ছলনায় একের পর এক ধ্বংস করে চলেছে বিভিন্ন দেশ আর জনপদ। প্রতিদিন আবিষ্কৃত হচ্ছে নিত্যনতুন মারণাস্ত্র, আর সেগুলো বারবার প্রয়োগ করা হচ্ছে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে।
মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইলের দ্বারা ফিলিস্তিনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মানব ইতিহাসের জঘন্যতম অপরাধ। আগ্রাসী ইসরাইল শক্তির মত্ততায় ন্যায়নীতি বিসর্জন দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। ফলে ফিলিস্তিন এখন মুসলিম নারী, শিশু, পুরুষের রক্তে রঞ্জিত এক জনপদ। তাদের অস্ত্রের আঘাতে ফিলিস্তিনের বাড়িঘর, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মসজিদ, হাসপাতাল সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হচ্ছে ফিলিস্তিনি শিশুদের লাশের সারি আর মায়েদের বুকফাটা আর্তনাদ। জাতিসঙ্ঘ, ওআইসি, আরব লিগ আর সারা বিশ্বের মুসলমান রাজা-বাদশাহরা প্রতিবাদ না করে নিশ্চুপ থাকলেও বাংলাদেশের সচেতন, জাগ্রত বিবেকের অধিকারী বিশ্বমানবতার পক্ষে লড়াকু কলমসৈনিক কবি-সাহিত্যিকরা ইসরাইলের আগ্রাসী যুদ্ধের বিরুদ্ধে কবিতার মাধ্যমে প্রতিবাদের প্রবল ঝড় তুলেছেন। এসব চিন্তা ভাবনা অপেক্ষার পর সম্প্রতি সময়ে বাজারে প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হয়েছে কবি, সংগঠক, সম্পাদক, হাছিবুর রহমান এর কবিতার বই “ফিলিস্তিনের কান্না”।
লেখক হাছিবুর পিরোজপুর সদরের তেজদাসকাঠী গ্রামের আব্দুস শুকুর হাওলাদারের বড় ছেলে। সম্পাদক, লেখক, নট্যকার, গীতিকার, সাইয়েদ আহমাদ দৈনিক নয়া দিগন্তেকে বলেন, ফিলিস্তিনের কান্না’র প্রতিটি পৃষ্ঠায় দেখতে পাওয়া যাবে ফিলিস্তিনে নির্যাতিত সব ভাইবোন মা বাবা পরিবার ও একটি দেশের নিরীহ জনগণের নির্যাতিত হওয়ার এক করুণ চিত্র। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় সন্ত্রাসবাদের উৎকৃষ্ট উদাহরণের জায়গায় জায়নবাদ অন্যতম। মানুষরূপী এক অমানুষের পরিচয় জানতে এই অভিশপ্ত ইয়াহুদী ও তাদের দোসরদের দিকে তাকালেই হবে। নিয়মিত অত্যাচার, নিপীড়নের জন্য ফিলিস্তিনিদের বেছে নেয়া হয়েছে। কারণ, তাদের জন্য কেউ-ই নাই। তাদের পাশে এক আল্লাহ ছাড়া কেউ ছিলো না, এবং আরব দেশগুলোর এ বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছতে না পারাও ফিলিস্তিনের বিপক্ষে অবস্থানের সামিল। মানবতা, মানবিকতা, ন্যায়বিচার, ন্যায্য অধিকার, সর্বোপরি স্বাধীনতা লঙ্ঘনের সমষ্ঠীগত উদাহরণ যখন চলছে, দূর্ভাগ্য হলো আমরা সে সময়ে বেঁচে আছি। সাক্ষী হয়ে চলছি এই নিকৃষ্টতর অপরাধের। হাছিবুর রহমানের কবিতার বই “ফিলিস্তিনের কান্না” শিশুদের উপযোগী বড়োরা এই বইটি পড়লে তাদের নিয়ে যাবে সেই ধ্বসস্তুপ ফিলিস্তিনে। সহজ সাবলিল ভাবে লেখক তার বেদনা ভরা কথায় ফিলিস্তিনের জন্য মন থেকেই প্রকাশ করেছেন ভালোবাসা। সত্যিকারের মানবতাবাদকে প্রমাণ/প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে ইসরায়েল নামক সন্ত্রাসবাদী দেশটাকে ফিলিস্তিন ভূখন্ড থেকে সরিয়ে নিতে হবে, এবং তাদের পূনর্বাসন করতে হবে আমেরিকা বা ইয়োরোপের ভূখন্ডে। ফিলিস্তিন তার সম্পুর্ণ জমিন ফিরে পেয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে। এর ব্যতিক্রম হলে মানবতা কলঙ্কিত হতেই থাকবে। “ফিলিস্তিনের কান্না” এর তরুন লেখক হাছিবু রহমান পিরোজপুরের সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, বাবুই সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা ও বাবুই পাঠারেরও প্রতিষ্ঠাতা। “ফিলিস্তিনের কান্না”লেখকের প্রথম বই।
লেখক হাছিবুর রহমানকে বই সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, যে ভূমি সবচেয়ে পবিত্র, সেই ভূমির শিশুদের উপর চলছে অমানবিক নিষ্ঠুরতা, পৃথিবীর ইতিহাসে কোন যুদ্ধে এত শহীদ শিশুর স্থান আছে কিনা আমার জানা নেই, ফিলিস্তিনের প্রকৃতি, পশু, পাখি, এবং মানুষের বিভৎস চিত্র ফুটিয়ে তুলেছি আমার ‘’ফিলিস্তিনের কান্না ‘’ কাব্যগ্রন্থে , আপনি পাঠকরলে কিছু সময় হলেও ফিলিস্তিনের বর্তমান সময়ে চলে যেতে পারবেন। এবং পরিবারের ছোট শিশুদের উপহার দিয়ে মানবিকতা ও দানবীকতার পার্থক্য বুঝাতে পারবেন এর প্রতিটি কবিতা আবৃত্তি উপযোগী এবং ছন্দ – তাল ও সহজ সাবলীল বাংলায় লেখা হয়েছে। তিনি আরো জানান, বইটি বর্তমান সময়ে পিরোজপুর পৌর শহরের কালীবাড়ি সড়কে হাছিব আর্টে পাওয়া যাবে এছাড়া বইটি জাতীয় বইমেলায় দ্বৈতা প্রকাশ স্টলে ও অনলাইন বাজার রকমারি.কমে, বই বিডি তে পাওয়া যাবে। বইটি ছাপা দিয়েছে দৈ¦তা প্রকাশনী, প্রকাশক সাইদ মাহমুদ বলেন, প্রতিবছর বইমেলা আসে আবার চলে যায়, আমাদের কাছে বইমেলা মানে হল ঈদ, তো এই ঈদের খুশির মধ্যেও ‘ফিলিস্তিনের কান্না’ বইটি ফিলিস্তিনের নির্যাতিত শিশু, পশু-পাখি প্রকৃতির করুন কান্না পাঠক হৃদয়ে দাগ কেটে যাবে । এত বাস্তবিক একটি কবিতার বই প্রকাশ করতে পেরে আমরা ধন্য।