ময়মনসিংহ প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ //
ময়মনসিংহের ত্রিশালে চলতি বোরো মৌসুমী ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে ধান মাড়াই শুরু করেছে কৃষকরা, ফলে দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। কৃষকরা তাদের জমির ধান কাটতে হিমশিম খাচ্ছে।
স্থানীয়ভাবে পর্যাপ্ত শ্রমিক না থাকায় বিভিন্ন উপজেলা থেকে কাজের সন্ধানে আসছে শ্রমিক। এমনই এক শ্রমিক বেচা-কেনার হাট বসেছে ত্রিশাল সাবরেজিস্টার অফিস সংলগ্ন রাস্তায়।
শ্রমিকরা এখানে নিজেদের শ্রম বিক্রির উদ্দেশ্যে জড়ো হয়ে থাকেন। কৃষকরা নির্দিষ্ট দাম দিয়ে কিনে নেন তাদেরকে। মূলত সকাল এবং সন্ধ্যায় এই হাটে শ্রমিকরা তাদের শ্রম বিক্রি করার জন্য অপেক্ষা করে।
শ্রমিকের হাটে কথা হয় নেত্রকোনা জেলার মদনের রবিউল মিয়ার সাথে। তিনি জানান, আমাদের এলাকায় কাজ নেই। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আমি। অভাবের সংসারের হাল ধরতে এখানে এসেছি। প্রতি বছর ত্রিশালসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় আমরা কাজ করি। এক মাস কাজ করলে ১৪-১৫ হাজার টাকা নিয়ে বাড়িতে ফিরতে পারি।
জামালপুর থেকে আসা ফজলু মিয়া বলেন, এ উপজেলায় মানুষগুলো অনেক ভালো। তারা আমাদের সাথে অনেক ভালো ব্যবহার করেন। কাজ শেষে পারিশ্রমিক দিয়ে দেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখানে শত শত শ্রমিক জড়ো হন। নির্দিষ্ট দামে বিক্রি হন তারা। কাজ পেলে তাদের মুখে হাসি ফুটে ,না পেলে মলিন মুখে অপেক্ষা করতে হয় পরবর্তী দিনের জন্য।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সামাদ মিয়া বলেছেন, এখনও পুরোদমে বোরো ফসলের ধান মাড়াই শুরু হয়নি। সপ্তাহ খানেক পরে এই হাটে আরো বেশি শ্রমিক আসবে। কেউ বিক্রি হন একদিন, কেউ পাচঁ দিন, কেউ সাত দিন, কেউ আবার দশ দিনের জন্য বিক্রি হন।
স্থানীয় সবজি ব্যবসায়ী কাওসার মন্ডল বলেন, কৃষি শ্রমিকরা এই হাটে অনেক বছর ধরে আসে। অনেকের বাড়ি জামালপুর, শেরপুর, হালুয়াঘাট, নেত্রকোনা, মদন, কেন্দুয়া, দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, পূর্বধলা উপজেলায়। তারা কৃষকদের জমিতে কাজ শেষ করে বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা, অফিসের বারান্দায় বা পরিত্যক্ত বিল্ডিংয়ে রাত্রিযাপন করেন। ধান কাটার মৌসুম শেষ হলে তারা চলে যান তাদের এলাকায়।
এসকে/এটিভি০৩/২৫০৪/এম