ইদুল হাসান, ইবি, এটিভি সংবাদ :
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) নবীন এক ছাত্রকে বিবস্ত্র করে র্যাগিংয়ের ঘটনার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও বিচার হয়নি অভিযুক্তদের। একে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গড়িমসি ও সদিচ্ছার অভাব বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ১৩৬ নং কক্ষে কিছু সিনিয়র পরিচয় পর্বের নামে ডেকে আনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে। এসময় তাকে কথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ নানা অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে বাধ্য করে তারা। এতে অস্বীকৃতি জানালে রড দিয়ে আঘাত করে ভুক্তভোগীকে। পরে জোরপুর্বক উলঙ্গ করে টেবিলের উপর দাড় করিয়ে রাখেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে।এছাড়াও এসময় তাকে নাকে খত দেওয়া সহ বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন করে অভিযুক্তরা। ওইদিন রাত সাড়ে ১২ টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় নির্যাতন চালানো হয়। এছাড়াও ভয় দেখিয়ে বার বার বেড-পত্র বাইরে ফেলে দেয় তারা। অভিযুক্তরা হলেন, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুদাচ্ছির খান কাফী এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাগর।
ঘটনার ছয়দিন পর গত ১৩ ফেব্রুয়ারী ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং হল প্রশাসন পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এ তদন্ত শেষে র্যাগিংয়ের সত্যতা পেয়েছে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি। এতে অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থীর সরাসরি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানান তারা। যাদের মধ্যে দুইজনের নির্যাতনের মাত্রা অধিক ছিল। ফলে তাদের বিধি অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি ও কম জড়িত থাকা এক শিক্ষার্থীকে সতর্ক করার সুপারিশ করেন পৃথক দুই তদন্ত কমিটি।
এ নিয়ে হল কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ড. আলতাফ হোসেন বলেন, আমরা তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছি। প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিয়মানুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটিকে কিছু জানানো হয় না।
প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, গত ঈদের ছুটির আগেই আমরা ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রশাসনের নিকট জমা দিয়েছি। এখন প্রশাসন বাকি সিদ্ধান্ত নিবেন।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, প্রতিবেদন সাধারণত রেজিস্ট্রারের নিকট জমা দেওয়া হয়। সেখান থেকে উপাচার্যের অনুমতিতে ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত হয়ে আমার কাছে আসে। প্রতিবেদন এখনো আমার কাছে আসেনি। আসলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে৷
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ. এম. আলী হাসানের সাথে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, এ বিষয়ে সঠিক মনে করতে পারছি না। চিকিৎসার জন্য আমি বাইরে আছি, অফিসে গিয়ে খোজ নিয়ে বলতে পারব।