পিরোজপুর থেকে রফিকুল ইসলাম, এটিভি সংবাদ
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে মাতৃসেবা প্রাইভেট ক্লিনিকে সরকারি রেজিস্ট্রিকৃত ডাক্তার ছাড়া ডেলিভারি করাতে গিয়ে নাছিমা বেগম নামের এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত শুক্রবার (২৪ জুন) রাত ১টার দিকে ওই ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। পারিবারিক সূত্রে জানা য়ায়, উপজেলার আটঘর নিবাসী মো. মহিদুল হাওলাদারের স্ত্রী নাসিমা বেগমের প্রসব বেদনা উঠলে তার স্বামী এবং জা হোসনে আরা বেগম দ্রুত ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। কিন্তু হাসপাতালের সামনে আসলে মাতৃসেবা ক্লিনিকের স্টাফরা তাদের ক্লিনিকে চিকিৎসা করানোর জন্য জোর করে এবং ভালো ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা হয় বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেন।
রোগীর জা হোসনে আরা বেগম দেখেন ক্লিনিকে কোনো ডাক্তার নেই আছে শুধু ক্লিনিকের প্রধান ডাক্তার আব্দুল মতিন সরদারের সহায্যকারী ডিএমএফ প্যারামেডিকেল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রাজীব রায় ও তার সহযোগী ঝর্ণা আক্তার। তারা সেখানে ভর্তি না করতে চাইলেও জোর করে রাজীব রায় ও ঝর্ণা আক্তার তাদের রোগীকে ভর্তি করান এবং গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ছাড়াই ডেলিভারি করানোর চেষ্টা করেন। রোগীর যখন বেশি বেদনা শুরু হয় তখন ব্যথানাশক ইনজেকশন করে এবং শরীরে স্যালাইন পুশ করেন।
এ সময় রোগী পানির পিপাসার কথা বললে রোগীকে হোমিওপ্যাথিক বোতলের মতো বোতলে কী যেন ওষুধ মুখে দেয় যা মুখে দেয়ার পরে মুখের এক অংশ কালো হয়ে যায়। পানির মতো ওষুধ খাওয়ানোর আগ মুহূর্তে রোগী কথা বলছিল। কিন্তু পরে কথা বন্ধ হয়ে যায় এবং শ্বাস বন্ধ হয়ে সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়।
পরে রাজীব রায় এম্বুলেন্স ডেকে তাদের পিরোজপুরে পাঠিয়ে দেয়। পরে তারা পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন এখন লাশ নিয়ে আসছেন কেন উনি তো অনেকক্ষণ আগেই মারা গেছেন। এই বিষয়ে অভিযুক্ত মাতৃসেবা ক্লিনিকের ডা. মতিন সরদারের সহকারী রাজিব রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের এখানে রোগী রাত ১২টার দিকে নিয়ে আসেন এবং রোগীর নিকট আত্মীয়রা আমাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে আসেন। পরে আমি দেখতে পাই রোগীর খুব খারাপ অবস্থা। আমরা তখন রোগীকে হার্টসম্যান সেলাইন পুশ করি। জানতে পারি রোগী এক সপ্তাহ আগে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ছিল। যার ফলে রোগী রক্ত স্বল্পতায় ভুগতেছিল।
আমরা রোগীর রক্ত লাগার ব্যাপারে তার পরিবারকে জানাই। পরে আমরা ৩০ মিনিটের মতো রেখে আমি ডা. মতিন স্যারের সঙ্গে কথা বললে তিনি রোগীকে পিরোজপুর পাঠিয়ে দিতে বলার পরে আমরা সেখানে পাঠিয়ে দেই। মাতৃসেবা ক্লিনিকের পরিচালক ডা. মতিন সরদার বলেন, রোগীর বিষয়ে আমাকে পরে জানানো হয়েছে। আমাকে জানানোর পর আমি পিরোজপুর দেশ ক্লিনিকে নিয়ে যেতে বলি। ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক জানান, এ ঘটনার বিষয়ে আমরা এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।