atv sangbad

Blog Post

মুরগি ডিম জিরার দাম চড়া, কমেছে সবজির দাম

আহসান হাবীব, এটিভি সংবাদ

রাজধানীর বাজারগুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে। দুই মুরগির দামই কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। আগের সপ্তাহেও মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল। ফার্মের মুরগির ডিম ডজনে পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে।

কোরবানির ঈদের পর থেকে কয়েক দফা বেড়েছে জিরার দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫০ থেকে ৭০ টাকা এবং এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ১০০ থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে বাজারে এখন বেশ কিছু সবজি কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে। ইলিশের ভরা মৌসুমেও বাজারে সরবরাহ কম। দামও বেশ চড়া।

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত দুই সপ্তাহে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকায় এবং সোনালির দাম প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা।

ফার্মের মুরগির ডিম ডজনে পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেড়ে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।রাজধানীর রামপুরা কাঁচাবাজারের জিহাদ ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী মো. বায়জিদ গতকাল বলেন, ‘বাজারে মুরগির চাহিদা বাড়ায় ব্রয়লার ও সোনালি—দুটির দামই বেড়ে গেছে। সোনালি প্রতি কেজি ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা এবং ব্রয়লার ১৯০ টাকায় বিক্রি করছি।’

রামপুরা বাজারে মুরগি কিনতে আসা আফরোজা আক্তার বলেন, ‘মধ্যবিত্ত পরিবারের চাকরিজীবীর সীমিত আয়, কিন্তু বাজারে পণ্যের দাম স্থির থাকছে না। একজনের আয় দিয়েই পরিবারের খরচ ও ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ সব চালাতে হয়।

খুব হিসাব করে চলছি, এর পরও এখন আর সব কিছু ঠিকমতো সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।’ 

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির বৃহস্পতিবারের বাজারদরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে ১৫ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭৫ থেকে ১৮৫ টাকা হয়েছে।

জিরার দাম চড়া
জিরার দাম গত এক মাসে কেজিতে ১০০ থেকে ১৮০ টাকা বেড়ে এখন মানভেদে এক হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহেই বেড়েছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা।

টিসিবির বাজারদরেও দেখা গেছে, গত এক মাসের ব্যবধানে জিরার দাম কেজিতে ১০০ থেকে ১৮০ টাকা বেড়েছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি রসুন প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং আমদানি করা চায়না রসুন ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানীকৃত কেরালা জাতের আদা প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা। প্যাকেটজাত চিনির সরবরাহ বন্ধ। খোলা চিনি প্রতি কেজি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা এবং আলুর কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।

রাজধানীর জোয়ারসাহারা বাজারের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বলেন, ‘কোরবানির ঈদের পর বাজারে নতুন করে জিরা, রসুন ও ডিমের দাম বেড়েছে। অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামে তেমন পরিবর্তন নেই। ঈদের আগে যে জিরা কেজি ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি করেছি, এটি এখন পাইকারিতে আমরাই কিনছি এক হাজার টাকার বেশি দরে। দাম বাড়ার কারণে খুচরায় প্রতি কেজি জিরা বিক্রি করছি এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ১৫০ টাকায়। আমদানি করা রসুনের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা। ডিমের ডজন ১৫০ টাকা।’

ইলিশের সরবরাহ কম, দাম বাড়তি

ভরা মৌসুমেও বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম। দামও বেশ চড়া। রাজধানীর বাজারগুলোতে বৃহস্পতিবার এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকায়। ৮০০ গ্রামের ইলিশের কেজি এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা, ৬০০ গ্রাম এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, ৪০০-৪৫০ গ্রাম ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং ২০০ গ্রামের জাটকা ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। বিক্রেতাদের ভাষ্য, বাজারে চাহিদার তুলনায় ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় দাম কমছে না।

এখনো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে চাষের মাছ। তেলাপিয়া আকারভেদে প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৪০ টাকা এবং পাঙ্গাশ প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। নলা মাছ প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা, এক কেজির রুই ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা, দুই কেজির রুই ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা এবং বড় কাতলা মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শিং মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০, ট্যাংরা ৬৫০ থেকে ৭০০ এবং মাঝারি চিংড়ি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দাম কমেছে

রাজধানীর বাজারগুলোতে সরবরাহ বাড়ায় বেশির ভাগ সবজির দাম কমেছে। বেগুন মানভেদে ৫০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পটোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, টমেটো ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা ও কচুমুখি ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

রাজধানীর রামপুরা কাঁচাবাজারের সবজি ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বৃহস্পতিবার বলেন, ‘বাজারে এখন পর্যাপ্ত সবজির সরবরাহ রয়েছে। তাই প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কমেছে।

এটিভি/এস

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ব্রেকিং নিউজ :