atv sangbad

Blog Post

atv sangbad > জাতীয় > গ্রেনেড হামলা মামলার পেপারবুক যাচাই-বাছাই চলছে : এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম

গ্রেনেড হামলা মামলার পেপারবুক যাচাই-বাছাই চলছে : এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম

 

বিশেষ প্রতিবেদন:
ইতিহাসের জঘন্যতম ও বর্বরোচিত একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সাড়ে ১০ হাজার পৃষ্ঠার পেপারবুক যাচাৃই-বাছাই চলছে সুপ্রিম কোর্টে। এই মামলার বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আনা আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। পেপারবুক যাচাই-বাছাই চূড়ান্ত হলেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানীর জন্য আবেদন করবে এটর্নি জেনারেলের কার্যালয়।
গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারিক আদালতের রায় বিষয়ে আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানি উচ্চ আদালতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হবে জানিয়ে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, মামলাটির গুরুত্ব উল্লেখ করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানির আবেদন করা হবে; যেন শুনানির জন্য একটি বেঞ্চে পাঠানো হয়। বিচারিক আদালত আসামিদের যে সাজার রায় প্রদান করেছেন তা যেন বহাল থাকে উচ্চ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের সে প্রচেষ্টা থাকবে।
তিনি বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট বর্বরোচিত এ হামলার ঘটনা। ইতোমধ্যে অনেক সময় অতিবাহিত হয়েছে। ভয়াবহ ও নৃশংস ওই হামলার যেন বিচার না হয় এবং আসল আসামিরা ধরা না পড়ে সেজন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়েছে। একটি রাজনৈতিক দলকে নিশ্চিহ্ন করতে এরূপ নারকীয় হামলার ঘটনা পৃথিবীতে আর হয়নি।
সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও হাইকোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মামলার পেপারবুক সুপ্রিম কোর্টে যাচাই বাছাইয়ের কাজ চলছে। ১৩ ভলিউমে মোট ৫৮৫ টি পেপারে বুক এসেছে, যা সাড়ে ১০ হাজার পৃষ্ঠা। মোট আপিল ২২টি ও জেল আপীল ১২ টি।
বহুল আলোচিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পেপারবুক গত ১৬ আগস্ট সরকারি ছাপাখানা (বিজি প্রেস) থেকে প্রস্তুত করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো হয়। একটি মামলার যাবতীয় নথি (নিম্ন আদালতের রায়, সাক্ষীদের সাক্ষ্য, জেরা, আসামির জবানবন্দিসহ সকল নথি) একসঙ্গে যুক্ত করে বাঁধাই করা নথিকেই পেপারবুক বলে। এই পেপারবুক প্রস্তুত না হলে হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয় না। অর্থাৎ এ শুনানির জন্য পেপারবুক প্রস্তুত করা আবশ্যকিয় বিষয়।
স্মরণকালের পৈশাচিক গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের দুই মামলার রায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর একই সঙ্গে ঘোষণা করে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। হত্যা মামলার রায়ে বিএনপি নেতা সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে ফাঁসির দণ্ড এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দলটির নেতা হারিছ চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া ১১ জনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড। আর বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় ১৯ জনকে ফাঁসি এবং ১৯জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই ৩৮ জনকে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের অন্য ধারায় ২০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দুই মামলায় আলাদাভাবে সাজা দেওয়া হলেও তা একযোগে কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের সাজা অনুমোদনের জন্য দুটি মামলায় ৩৭ হাজার ৩৮৫ পৃষ্ঠার এই রায়ের কপি (ডেথ রেফারেন্স) ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরপর কারাবন্দী আসামিরা ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। এ অবস্থায় পেপারবুক প্রস্তুত করতে বিজি প্রেসে পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগের সমাবেশে পৈশাচিক গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতা-কর্মী। তাদের অনেকে আজও শরীরে গ্রেনেডের স্পিøন্টার নিয়ে দুঃসহ জীবন যাপন করছেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ব্রেকিং নিউজ :