এস এম ডাবলু, রাজশাহী প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
সাংবাদিক সমাজের দর্পন, সাংবাদিক জাতির বিবেক এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচারে ও অপরাধ দমনে গণমাধ্যম রাষ্ট্রের অন্যতম চোখ। সেই গণমাধ্যম আজ হুমকির মুখে কতিপয় হলুদ সাংবাদিকদের কারণে।
জেলা রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার আনাচে-কানাচে তৈরি হয়েছে ব্যাঙের ছাতার মত হলুদ সাংবাদিক। প্রতিদিনই যাদের চাঁদাবাজি আর মামলার দালালি করাই মুল পেশা। এইসব থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, যারা দুইদিন আগেই ভ্যান চালালো, নাপিতগিরি করলো, কোনদিন স্কুলে গেছে কিনা জানিনা তারা আবার সাংবাদিক হয় কিভাবে? তাই এই সকল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করা অতি জরুরি। সাংবাদিক হচ্ছে জাতির বিবেক কিন্তু কিছু অসাধু অশিক্ষিত অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংবাদিক পরিচয় দেয় এমন অনেক সাংবাদিক বাগমারা উপজেলায় রয়েছে। যাদের কোনই যোগ্যতা নেই, কিছু নিউজ পোর্টালের সম্পাদকরা তাদের যোগ্যতা যাচাই বাছাই না করে টাকার বিনিময়ে কার্ড দিচ্ছে তারাই করছে চাঁদবাজি আর থানার মামলার দালালিসহ মাদক ব্যবসা।
এই অসাধু হলুদ সাংবাদিকদের কারণে সাংবাদিকেরা মানুষের কাছে হয়ে গেছে সাংঘাতিক। এক সময় ছিল মানুষ যখন সাংবাদিকদের দেখতে অথবা নাম শুনেছে তখনি জাতির বিবেকের উপর কতই না ভরসা, কতই না সম্মান করছে মানুষ। কিন্তু আজ অপ-সাংবাদিকতার কারণে কোথায় সেই জাতির বিবেক ও দর্পনদের অবস্থান?
সাংবাদিকেরা কখনো মিথ্যার কাছে আপোষ করেনি, কিন্তু কোথায় সেই অবস্থান? আজ আমরা সাংবাদিক দেখছি যারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পার হতে পারেনি। মাদকব্যবসার সাথে জড়িত অথবা পুলিশের দালালি করেছে তারাই আজ সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে উপজেলায় চাঁদাবাজি ও দালালি করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আবারও দেখা গেছে অহরহ মুচির ছেলে, নাপিতের ছেলে, সুইপারের ছেলেরাও সাংবাদিক পরিচয় দেয় যাদের কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই অথবা তারাও স্কুলের বারান্দায় পা রাখেনি এমনি অহরহ প্রমাণ আছে উপজেলাতে।
মোটরসাইকেলের সামনে তারা প্রেস লেখে মানুষকে হয়রানি আর চাঁদাবাজি করে। আর এলাকায় ঘুরে বিভিন্ন প্রকার মাদকের ব্যবসা করছে এক প্রকার হলুদ সাংবাদিকেরা। বাগমারার মুল ধারার সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাগমারার আনাচে কানাচে কতিপয় অনলাইন কার্ডধারি হলুদ সাংবাদিকরা অন্যের নিউজ কপিরাইট করে সংবাদ প্রচার করে যা তথ্য প্রযুক্তির আইনে দন্ডনিয় অপরাধ।
এসব বিষয়ে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আসিতেছে যা আদৌ কোনদিন কলম খাতায় প্রতিবেদন লেখার যোগ্যতা রাখে না। তারা আরো বলেন, কিছু দাপটধারী হলুদ সাংবাদিকরা মুল ধারার সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে বাধা প্রদান করছে এমনকি তাদের স্বার্থে ব্যাঘাত ঘটায় ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের চাহিদা মত জায়গায় তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হচ্ছে। এদিকে সাংবাদিকের সম্মানের খাতিরে তাদেরকে কিছুই বলতে পারছে না পুলিশ এবং পুলিশ বুঝতে পারছেনা যে তারা ভূয়া হলুদ সাংবাদিক।
এসব ভূয়া হলুদ সাংবাদিকদের কারণে মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধ গোপনে পার পাচ্ছে । তাই স্থানীয় উপজেলাবাসির দাবি এই সব চাঁদাবাজ, দালাল ও হলুদ সাংবাদিকদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সাংবাদিকদের যোগ্যতা যাচাইবাছাই করা একান্ত প্রয়োজন বলে অনেকে মনে করেন। তাই প্রশাসনের উচিৎ অতি জরুরিভাবে সঠিক সাংবাদিক যাচাই করে মূল্যায়ন করে একটি তালিকা তৈরি করা। পাশাপাশি অযোগ্য, অশিক্ষিত, হলুদ সাংবাদিকদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা। তা না হলে অচিরেই জাতির বিবেক ধ্বংসের দারপ্রান্তে পতিত হবে।
তাই রাষ্ট্রের চিন্তাবিদের অভিমত এই মুহুর্তে সরকারের করনীয় হবে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে সৎ, যোগ্য সাংবাদিকের তালিকা করাসহ অসৎ, অশিক্ষিত, নাপিতের ছেলে, ভ্যান চালকের অযোগ্য ছেলেদের পাশাপাশি বিভিন্ন অপরাধে জড়িত যারা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অপর্কম করে বেড়াচ্ছেন, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করে সাংবাদিকতার মহান পেশাকে সঠিক জায়গায় দাঁড় করানোই হবে গনমাধ্যমের মুল ধারার স্বার্থকতা।