পঞ্চগড়ে মধ্যরাতে দায়িত্বরত অবস্থায় মাথায় গুলি করে ফিরোজ আহমেদ (২৫) নামে এক পুলিশ কনস্টেবলের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে আর দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথেই বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ওই পুলিশ সদস্য আত্মহত্যার পথ বেছে নেন বলে জানায় পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে পঞ্চগড় জেলা শহরের সোনালী ব্যাংকের ভেতরে এই ঘটনা ঘটে। ফিরোজ আহমেদের বাড়ি দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার পলি মির্জাপুর আবতাবগঞ্জ এলাকায়। তিনি ওই এলাকার আবু সাঈদের ছেলে।
রাত ১টায় উপমার আবারও শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তিনি সোনালী ব্যাংকের সামনে গিয়ে আবারও তার স্বামীর সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। ফিরোজ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়ে ডিউটিতে ফিরে আসেন।
ফিরোজের সহকর্মী হাসান আলী বলেন, ‘দুদিন ধরে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। তার দ্বিতীয় স্ত্রী ব্যাংকের সামনে এসেও তার সাথে ঝগড়া করে। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেওয়া হয়। তবে তাদের মধ্যে মোবাইলে তর্ক-বিতর্ক হচ্ছিল। আমরা নিজ নিজ কক্ষে ছিলাম। ও ছিল গার্ড রুমে। রাত ২টায় তার ডিউটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। তার কয়েক মিনিট আগে হঠাৎ আমরা গুলির শব্দ শুনতে পাই। গিয়ে দেখি ফিরোজ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পরে আমরা পুলিশের গাড়িতে করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
ফিরোজের দ্বিতীয় স্ত্রী উপমা বলেন, ‘আমি এখন কিছুই বলতে পারব না।’
উপমার মা ফাতেমা খাতুন বলেন, ‘আমরা জানি উপমা দিনাজপুরে কোচিং করছে। সামনে তার পরীক্ষা। কিন্তু সে যে বিয়ে করে পঞ্চগড়ে আছে আমরা কেউ জানতাম না। ফিরোজের আগের স্ত্রী ও পরিবারও জানত না। এই ঘটনার পর এখন সব কিছু জানলাম। আমার মেয়ের শ্বাসকষ্ট হলেও ফিরোজ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করছিল না। এজন্য তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে বলে শুনেছি।’
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মির্জা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘ওই পুলিশ সদস্যকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার থুতনির নিচে ও মাথার উপরে গর্তসহ মারাত্মক জখম হয়েছে।’
পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, ‘দাম্পত্য কলহের জেরে ওই পুলিশ সদস্য নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছে। ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ প্রথম জানাজা হওয়ার পর তার গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।’