স্পোর্টস ডেস্ক, এটিভি সংবাদ
প্রথম পর্বের ১১ ম্যাচে ৬ জয় নিয়ে সুপার লিগের টিকিট পেয়েছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। এরপর যেন জয় তাদের জন্য সোনার হরিণই হয়ে যায়। সুপার লিগে পরপর চার ম্যাচে হেরে কোণঠাসা হয়ে পড়ে শুভাগত হোমের দল। অবশেষে লিগের শেষ ম্যাচে তারা পেয়েছে আরাধ্য জয়।
প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ২৫ রানের বড় জয় পেয়েছে মোহামেডান। বৃষ্টিতে ১৩ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে আগে ব্যাট করে ১০৩ রান করেছিল সাদাকালোরা। দোলেশ্বরের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩ ওভারে ১০৭ রানের। কিন্তু ১১.৪ ওভারে মাত্র ৮১ রানেই অলআউট হয়ে গেছে দোলেশ্বর।
মোহামেডানের দেয়া ১০৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা বেশ ভালো ছিল দোলেশ্বরের। প্রথম তিন ওভারে ৩৫ রান করে ফেলেছিল তারা। সেখান থেকে শুধু পেছনের দিকেই গিয়েছে দলটি। শুরুর ধাক্কাটা দেন ইয়াসির আরাফাত মিশু। নিজের ৩ ওভারে মাত্র ১১ রান খরচায় ৪ উইকেট নেন এ ডানহাতি পেসার।
আর দোলেশ্বরের ইনিংসের শেষ টানেন তরুণ বাঁহাতি পেসার রুয়েল মিয়া। তিনি মাত্র ১৬ বলের মধ্যে তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট, খরচ করেছেন ২১ রান, জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। চলতি লিগে মোস্তাফিজুর রহমান, সালাউদ্দিন শাকিল ও আনিসুল ইসলাম ইমনের পর চতুর্থ বোলার হিসেবে ফাইফার নিয়েছেন রুয়েল।
মিশু-রুয়েলের বোলিং তোপের মাঝে দোলেশ্বরের পক্ষে দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন তিন ব্যাটসম্যান। তারা হলেন ইমরানউজ্জামান (৮ বলে ১৫), সাইফ হাসান (১০ বলে ১১) ও ফজলে রাব্বি (১৬ বলে ১৭)। বাকি সবাই হতাশার জন্ম দিয়ে বরণ করেছেন করুণ পরাজয়।
এরপর যখন পুনরায় শুরু হয় খেলা, তখন দুই ইনিংস থেকে কেটে নেয়া হয় ৭ ওভার করে। ফলে ম্যাচের দৈর্ঘ্য নেমে আসে ১৩ ওভার প্রতি ইনিংসে। এমন ম্যাচে ধীর ব্যাটিং করেছেন মোহামেডান ওপেনার অভিষেক মিত্র (১২ বলে ৩) ও তিনে নামা শাকিল হোসেন (১৯ বলে ১৮)।
শুরুর এই ধীর অবস্থা কাটাতে হাত খুলে খেলতে শুরু করেছিলেন তরুণ বাঁহাতি ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। কিন্তু বেশিক্ষণ পারেননি। এনামুল হক জুনিয়রের ওভারে আউট হওয়ার আগে ২১ বলে ২৬ রান করেন তিনি। হতাশ করেন শামসুর রহমান শুভ (৯ বলে ৯) ও ইরফান শুক্কুর (৪ বলে ৭)।
বৃষ্টিতে খেলার দৈর্ঘ্য কমে এসেছে ১৩ ওভারে। এমন ম্যাচে স্বাভাবিকভাবেই মারমুখী ব্যাটসম্যানদের ওপর বেশি ভরসা রাখার কথা যেকোনো দলের। কিন্তু মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব যেন করল ঠিক উল্টোটাই। পুরো আসরে দলের পক্ষে সবচেয়ে মারমুখী খেলা শুভাগত হোমকে নামাল ইনিংসের মাত্র ১৫ বল বাকি থাকতে।
অবশ্য ছয় নম্বরে নেমেও নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন দলের অধিনায়ক। মোহামেডানের ইনিংসের প্রথম ১০.৩ ওভারে বাউন্ডারি হয়েছিল মাত্র ৬টি। আর শুভাগত হোম নামার পর শেষের ১৫ বলে ৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে হয়েছে ২টি ওভার বাউন্ডারি।
শুরুর ১০.৩ ওভারে মাত্র ৬৪ রান করা মোহামেডান, ১৩ ওভার শেষে পায় ৫ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রানের সংগ্রহ। অর্থাৎ শেষের ১৫ বল থেকে আসে ৩৯ রান। যেখানে শুভাগতর অবদান ২টি করে চার-ছয়ের মারে ৮ বলে অপরাজিত ২৩ রান। আর মাহমুদুল হাসান লিমন করেন ৬ বলে ৯ রান।
মূলত শেষ ওভারেই আসল ঝড়টা তোলেন শুভাগত। কামরুল ইসলাম রাব্বির করা সেই ওভারে আসে ২৮ রান। ওয়াইড দিয়ে ওভার শুরুর পর ১ রান নেন লিমন। পরের চার বলে যথাক্রমে ৪, ৪, ৬ ও ৬ হাঁকান শুভাগত। এর মধ্যে প্রথম ছয়ের ডেলিভারিটি ছিল কোমর উচ্চতার নো বল।
ওভারের পঞ্চম বলে সিঙ্গেল নেন শুভাগত আর শেষ বলে থার্ড ম্যান দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলীয় সংগ্রহ একশ পার করান লিমন। দোলেশ্বরের পক্ষে ২ উইকেট নিয়েছেন এনামুল জুনিয়র। আর আসরের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি কামরুল রাব্বি ৩ ওভারে খরচ করেছেন ৪৫ রান, পেয়েছেন ১টি উইকেট।