atv sangbad

Blog Post

atv sangbad > অপরাধ-অনুসন্ধান > ওসির বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ!

ওসির বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ!

কক্সবাজার প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ 

বিরোধপূর্ণ হোটেল অবৈধভাবে জবরদখল করে দিতে একপক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে সরকারদলীয় রাজনৈতিক কর্মী ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা নেয়ার অভিযোগ ওঠেছে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসির বিরুদ্ধে।

এ অভিযোগের ভিত্তিতে রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এম এ মোনাফ সিকদার, জেলা প্রজন্ম লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ওবাইদুল হোছাইন ও ব্যবসায়ী গুরা মিয়া।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা প্রজন্ম লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ওবাইদুল হোছাইন বলেন, গত ১৩ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে কক্সবাজার হোটেল মোটেল জোনে আমার আত্মীয় রিদুয়ান ছিদ্দিকের মালিকানাধীন হোটেল স্বপ্ন রিসোর্টটি পুলিশের সঙ্গে আঁতাত করে জবরদখলের চেষ্টা চালায় একাধিক ইয়াবা মামলার আসামি ও জেল ফেরত ঈদগাঁও চালালাবাদ এলাকার মৃত রিয়াজের পুত্র মো. নাসির।

এ সময় জাতীয় সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সহযোগিতা চাওয়া হয়। কিন্তু থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যেতে গড়িমসি করে। একপর্যায়ে ঘটনার ১ ঘণ্টা পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নাসির, কলাতলীর সবুজসহ ৩ জন দুষ্কৃতকারীকে ঘটনাস্থল হতে হাতেনাতে আটক করে পুলিশ ভ্যানে তুলে। কিন্তু তাৎক্ষণিক কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি শেখ মুনিরুল গিয়াসের নির্দেশে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আটককৃত ৩ জনকে ছেড়ে দেয়।

পাশাপাশি তাদের কথামতো রিসোর্টে তালা মেরে চাবি ওসি সাহেবের কাছে জমা দেয় পুলিশ। ওই তারিখেই ১৮ জনকে আসামি করে থানায় এজাহার দেয়া হয়। কিন্তু ওসি উক্ত এজাহার নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু করেননি। পরে ইয়াবা ব্যবসায়ী নাছিরকে অবৈধভাবে হোটেল দখল করিয়ে দিতে নগদে ১০ লাখ টাকা নেন ওসি।

তারপর তার মিশন সফল করতে সম্প্রতি ফেসবুকে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমানের নামে বিভিন্ন মানহানিকর ও অনৈতিক পোস্ট প্রচারের ঘটনায় রেকর্ডকৃত একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আমাকে ২নং আসামি করা হয়।

কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এমএ মোনাফ সিকদার বলেন, শফিক খাঁন নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলে আসছিল। এ ঘটনায় পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা খোরশেদ আলম বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।

ওই মামলায় শফিক খান নামক ফেসবুক আইডিধারীকে ১নং আসামি করা হলেও আমাকে ৩নং আসামি করা হয়েছে; যা আমি কিছুই জানি না। মূলত আমার আত্মীয়ের হোটেল কলাতলীর স্বপ্ন রিসোর্ট অবৈধভাবে দখল করে দেয়ার মিশনে এক জনপ্রতিনিধি ও জেলার শীর্ষ রাজনীতিবীদের ইন্ধন রয়েছে। যে কারণে ওসিকে নগদ টাকায় ম্যানেজ করে আমাকেও এই মামলায় আসামি করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী গুরা মিয়া জানান, গত ২৮ এপ্রিল কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মুনিরুল গিয়াস জি.আর-২৭৭/২০২১ নং মামলাটি থানায় রুজু করেন। এ মামলায় আমাকেও আসামি করা হয়েছে। কিন্তু আমি ফেসবুক সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না। তাছাড়া গত এক বছর ধরে আমার কোনো স্মার্টফোনও নেই। তারপরেও কেন আসামি হলাম জানি না। আমি ওসির ঘুষ বাণিজ্যের বিচার দাবি করছি।

হোটেল মালিক রিদুয়ান ছিদ্দিক জানান, মূলত এসআই  মো. দস্তগীর হোসেন ও ওসি মনিরুল গিয়াস আমার হোটেলটি ইয়াবা ব্যবসায়ী নাছিরকে দখল করে দেয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে আমার আত্মীয়স্বজনদের বিরুদ্ধে এ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাটি দিয়ে হয়রানি করছে। আমি এ মামলার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক ওসির বিচার দাবি করছি।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি শেখ মনিরুল গিয়াস বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশে মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। মামলাটি প্রযুক্তিনির্ভর মামলা। কেউ চাইলেও প্রভাব খাটিয়ে নিরপরাধ ব্যক্তিকে জড়ানোর সুযোগ নেই। যদি কোনো আসামি নিরপরাধ হয়ে তাকে তাহলে নিশ্চিত করে বলতে পারি সে পুলিশি হয়রানির শিকার হবে না।

ওসি বলেন, এখানে টাকা লেনদেনের কোনো প্রশ্নই আসে না। এটি আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যাচার এবং বিভ্রান্ত করার জন্যই টাকা লেনদেনের মতো জঘন্যতম অভিযোগ আনা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি রেকর্ডের পর নানা অভিযোগ ওঠায় ইতোপূর্বে সঠিক তদন্তের স্বার্থে পুলিশ সুপারের নির্দেশে থানা থেকে মামলাটি জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় নিয়ে আসার কার্যক্রম চলছে। পাশাপাশি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ মামলায় প্রকৃত অপরাধী ছাড়া কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার হবে না বলে তিনি জানান।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ব্রেকিং নিউজ :