atv sangbad

Blog Post

atv sangbad > সম্পাদকীয় > নিত্যপণ্যের বাজারে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন

নিত্যপণ্যের বাজারে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন

এস এম জামান, এটিভি সংবাদ 

একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধ মজুত গড়ে তুলে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে-এ অভিযোগ যে অমূলক নয়, এর প্রমাণ পাওয়া গেল সয়াবিন তেলের অবৈধ মজুতের ঘটনায়। গত বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাতে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ড উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ২৫ ড্রাম সয়াবিন তেল উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি কবুতর খামারে অভিযান চালিয়ে ১২ ড্রাম তেল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলেও সয়াবিন তেলের গোপন গোডাউনের সন্ধান পাওয়া গেছে। অবৈধভাবে ভোজ্যতেল মজুত করায় শ্রীমঙ্গলের দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে।

জানা যায়, বিগত বছরগুলোর মতো এবারও আসন্ন রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করার জন্য একাধিক চক্র তৎপর রয়েছে। এসব চক্রের তৎপরতা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে যে পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন, ভোক্তারা এর সুফল পাবে কি না সন্দেহ। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের তথ্য বিশ্লেষণ থেকে স্পষ্ট হচ্ছে, আমদানি ও সরবরাহে কোনো ধরনের সংকট না থাকলেও সয়াবিন তেলের দাম এখন আকাশচুম্বী।

ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে গিয়ে ভোক্তাদের মধ্যে নাভিশ্বাস উঠেছে। তাদের অভিযোগ, আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে সম্প্রতি সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। গড়ে তুলেছে মজুত, এর ফলে সৃষ্টি হয়েছে কৃত্রিম সংকট। এ সংকটকে পুঁজি করে পাইকারি থেকে খুচরা বাজার-সব পর্যায়ে এক ধরনের হাহাকার তৈরি হয়েছে। এভাবেই হুহু করে বাড়ছে এ পণ্যটির দাম। শুধু ভোজ্যতেল নয়, অন্যান্য নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রেও যে এ ধরনের কারসাজি চলছে, তা সহজেই অনুমেয়। এ অবস্থায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাজারে গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারি বাড়াতে হবে।

করোনার কারণে গত দুই বছরে বহু মানুষের আয় কমেছে। সীমিত ও নিম্ন আয়ের মানুষ পরিবারের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। এ সময় জীবনযাত্রার সব খাতে ব্যয়বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে মানুষ পরিস্থিতি সামাল দেবে কীভাবে? যেহেতু বাড়তি ব্যয় সামাল দেওয়ার মতো আয় বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না, সেহেতু বাধ্য হয়ে ভোক্তাদের ভোগ কমাতে হচ্ছে।

এ অবস্থা বেশিদিন চলতে থাকলে দেশের জনসম্পদ খাতে ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। পুষ্টিকর খাবার নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার কারণে জনস্বাস্থ্য খাতে যে প্রভাব পড়বে, তাতে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়েও সন্দেহ থেকে যায়।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে এমনিতেই জীবনযাত্রার সব খাতে এর প্রভাব বিদ্যমান। এ সময় যদি অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি চলমান থাকে, তাহলে সীমিত ও নিম্ন আয়ের মানুষ পথে বসতে বাধ্য হবে। কাজেই কোনো ব্যক্তি যাতে কারসাজি করে বা পণ্যের অবৈধ মজুত গড়ে তুলে নিত্যপণ্যের বাজারকে অস্থিতিশীল করতে না পারে, সেদিকে কঠোরভাবে নজর রাখতে হবে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ব্রেকিং নিউজ :