এস এম জামান, এটিভি সংবাদ
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রমজানে অহেতুক মূল্য বৃদ্ধি ও মজুতদারি নিয়ন্ত্রণে সরকার সতর্ক রয়েছে। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেছেন, রমজান এলেই একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, বাজার অস্থির করার যে কোনো অপপ্রয়াস সরকার মেনে নেবে না; কোনো ধরনের সিন্ডিকেটের কাছে বাজার ব্যবস্থাকে জিম্মি হতে দেওয়া হবে না। বস্তুত তিনি মানুষের মনের কথাই বলেছেন।
গত কয়েক বছর ধরেই লক্ষ করা গেছে, রমজান শুরুর মাসখানেক আগে থেকেই বাজারে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। রমজানের প্রাক্কালে প্রতি বছরের মতো এবারও বাজারে পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে রাজধানীর খুচরা বাজারে ছোলা, ভোজ্যতেলসহ বিভিন্ন পণ্য বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, অসাধু সিন্ডিকেট গত দুই মাসে ধাপে ধাপে এসব পণ্যের দাম বাড়িয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।
লক্ষ করা যায়, রমজানের প্রাক্কালে পণ্যের দাম যে পরিমাণ বাড়ানো হয়, পরে তা আর কমানো হয় না। কাজেই বাজারের নিয়ন্ত্রণ যাতে দুষ্টচক্রের হাতে চলে না-যায়, সেজন্য কঠোর মনিটরিং প্রয়োজন। কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে দায়ী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আমরা প্রতিবছর রমজানের আগে নানা রকম স্বস্তিদায়ক আশ্বাস শুনতে পাই। তবে অভিজ্ঞতা বলে-শেষ পর্যন্ত বাজারের নিয়ন্ত্রণ চলে চায় দুষ্টচক্রের কবজায়। অবশ্য এক্ষেত্রে ভোক্তারাও দায়মুক্ত নন। রোজা শুরুর আগে অনেকেই বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়ায় বিক্রেতারা এর সুযোগ নেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণের ফলে মানুষ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়। কাজেই নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ ও বিক্রি যে কোনো মূল্যে বন্ধ করতে হবে। মানহীন ও অনিরাপদ খাদ্য শহরাঞ্চলের বাইরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিক্রির তৎপরতা বেশি চালায় অসাধু ব্যবসায়ীরা।
কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি জনগণকেও নিরাপদ খাদ্য গ্রহণের ব্যাপারে সচেতন করে তুলতে হবে। খাদ্যপণ্যের দাম যাতে সীমিত ও স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে না-যায়, তা নিশ্চিত করা জরুরি। দেশে ভোক্তা-শ্রেণি একদিকে ভেজাল খাদ্য গ্রহণে বাধ্য হচ্ছে, অন্যদিকে খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক দাম মেটাতে গিয়ে তারা দিশেহারা হয়ে পড়ছে। ভোক্তা-শ্রেণির এ দুর্ভোগ কীভাবে লাঘব করা যাবে, তা ভাবতে হবে একমাত্র সরকারকেই।