atv sangbad

Blog Post

atv sangbad > প্রচ্ছদ > করোনা প্রাদুর্ভাব ও সংক্রমণ॥ সফটওয়্যার ও সেবাপণ্য রফতানি কমায় পূরণ হচ্ছে না টার্গেট

করোনা প্রাদুর্ভাব ও সংক্রমণ॥ সফটওয়্যার ও সেবাপণ্য রফতানি কমায় পূরণ হচ্ছে না টার্গেট

 

তথ্য-প্রযুক্তি ডেস্ক:
এ বছর সফটওয়্যার ও সেবাপণ্য রফতানির লক্ষ্য ছিল এক থেকে দেড় বিলিয়ন ডলার। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও সংক্রমণ সেই লক্ষ্য পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার রফতানি কম হবে। রফতানির গতি আগের ধারায় ফিরতে দুই বছর লেগে যেতে পারে। আগামী দুই বছরে সফটওয়্যার রফতানি আগের ধারায় ফিরে আসবে বলে আশাবাদী দেশের সফটওয়্যার ও সেবাপণ্য নির্মাতাদের সংগঠন বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর।
বেসিস সভাপতি বলেন, ‘লকডাউনের শুরুতে সফটওয়্যার রফতানি একেবারে বন্ধ ছিল। বর্তমানে অল্প অল্প করে রফতানি ফের শুরু হয়েছে। এটা ঠিক হতে সময় লাগবে। যে ধাক্কা অন্যান্য খাতের মতো এ খাতেও লেগেছে, আগে তা সামাল দিতে হবে।’
জানা গেছে, এর আগে টার্গেট ছিল ২০১৮ সালের মধ্যে এক বিলিয়ন ডলারের সফটওয়্যার রফতানি। ২০১৯ সালের শুরুতে সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে বলে বেসিস সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অন্যদিকে ২০২১ সালের টার্গেট ছিল পাঁচ বিলিয়ন ডলারের রফতানি। সেই লক্ষ্য এখন পুনর্র্নিধারণ করা হয়েছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের লক্ষ্য পাঁচ বিলিয়ন ডলারের সফটওয়্যার রফতানি।
এ বিষয়ে সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, ‘২০২৪ সাল লাগবে না, তার আগেই হয়তো আমরা রফতানিতে সফল হবো।’ তিনি জানান, সফটওয়্যার রফতানির সব অর্থ ব্যাংকের মাধ্যমে আসে না বলে প্রকৃত তথ্য পাওয়াও কঠিন। তিনি মনে করেন, সফটওয়্যার রফতানিতে ক্যাশ ইনসেনটিভ (আর্থিক প্রণোদনা) দেওয়াসহ বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে সফটওয়্যার রফতানি বাড়ায় ২০১৮ সালের টার্গেট সহজে পূরণ হয়েছে।
জানা যায়, বিশ্বের ৮০টির বেশি দেশে সফটওয়্যার ও সেবাপণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যর পাশাপাশি ইউরোপের অনেক দেশ বাংলাদেশ থেকে সফটওয়্যার ও সেবাপণ্য আমদানি করে। রফতানি হওয়া পণ্য ও সেবার মধ্যে প্রধানতম হচ্ছে—সফটওয়্যার, বিপিও (বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং) ওয়েবসাইট ডিজাইন, অ্যাপস, গেমস, অ্যাপ্লিকেশন প্ল্যাটফর্ম, ভিওআইপি অ্যাপ্লিকেশন, ডাটা-এন্ট্রি, গ্রাফিকস ডিজাইন, প্রি-প্রেস, ডিজিটাল ডিজাইন, সাপোর্ট সার্ভিস, কাস্টমাইজড অ্যাপ্লিকেশন তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি।
সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, সফটওয়্যার রফতানি বাড়ানোর জন্য জাপানে বাংলাদেশ ‘জাপান ডেস্ক’ স্থাপন করেছে। জাপানে বাজার বাড়ানোর জন্য এই ডেস্ক বিশেষ ভূমিকা রাখছে। সে দেশ প্রতি বছরের মে মাসে ‘জাপান আইটি উইক’ আয়োজন করে থাকে। সেই আয়োজনে বাংলাদেশ থেকে অনেক প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের পণ্য ও সেবা সবার সামনে তুলে ধরে। জাপানে সফটওয়্যার বিপণনও করছে।
জানা গেছে, জাপানে সাফল্যের পরে আরও দুটি দেশে ডেস্ক খুলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডসে ডেস্ক খুলে বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের বাজারে ভালোভাবে প্রবেশ করতে চায়। ইউরোপের অনেক দেশ বাংলাদেশ থেকে সফটওয়্যার আমদানি করে থাকে। নেদারল্যান্ডসে ডেস্ক খুলে সেসব দেশে নিজেদের বাজার আরও বড় করতে চায় বেসিস। এতে করে কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং ভালো হয়, ইমেজ বাড়ে এবং নিজ দেশের কর্মীরা যে দক্ষ, তা বিশ্বের সামনে তুলে ধরা সহজ হয় বলে মনে করেন বেসিস নেতারা।
বাংলাদেশ থেকে ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ২৮ লাখ ডলারের সফটওয়্যার রফতানি হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০০৩ সাল থেকে বাংলাদেশ সফটওয়্যার রফতানি শুরু করে। ওই বছর রফতানির পরিমাণ ছিল ৭২ লাখ ডলার। ২০০৪-২০০৫ অর্থবছরে রফতানির পরিমাণ ছিল এক কোটি ২৬ লাখ ডলার। এরপর ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে দুই কোটি ৭০ লাখ ডলার, ২০০৬-০৭ অর্থবছরে দুই কোটি ৬০ লাখ ডলার ও ২০০৭-২০০৮ অর্থবছরে দুই কোটি ৪৮ লাখ ডলারের সফটওয়্যার রফতানি হয়। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে সফটওয়্যার রফতানির মাধ্যমে আয়ের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ৩ কোটি ২৯ লাখ ডলারে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। ২০১০-১১ অর্থবছরে এসে ২৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে সফটওয়্যার রফতানি দাঁড়ায় সাড়ে চার কোটি ডলারে।
২০১২-১৩ অর্থবছরে সফটওয়্যার রফতানি আয় প্রথমবারের মতো ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) ডলার অতিক্রম করে। ওই অর্থবছরে মোট রফতানির পরিমাণ ছিল ১০ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার। এই আয় বেড়ে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১২ কোটি ৪৭ লাখ ২০ হাজার ডলার ও ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে প্রায় ১৩ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এই খাত থেকে ৬০০ মিলিয়ন ডলার রফতানি আয় হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রফতানি আয় ছিল ৭০০ মিলিয়ন ডলার। ২০১৮ সালের শুরুতে বেসিস জানায়, ৮০০ মিলিয়ন ডলারের সফটওয়্যার রফতানি হয়েছে। বাকি সময়ে তা এক বিলিয়নে পৌঁছে যাবে। (২০১৮ সালের টার্গেট ছিল এক বিলিয়ন ডলার)। ২০১৯ সালের শুরুতে বাংলাদেশ এক বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যে পৌঁছে।

 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ব্রেকিং নিউজ :