পাবনা প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সড়ক ও জনপথের (সওজ) ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়কে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দরপত্রানুযায়ী কাজ না করায় সড়কের কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন এলাকাবাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২০/২১ অর্থবছরে উপজেলা সদরের শরৎনগর বাজার ও লাহিড়ী মোহনপুর সড়কের শরৎনগর রেলগেট থেকে কৈডাঙ্গা মোড় পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজের দরপত্র আহবান করে পাবনার সড়ক ও জনপথ বিভাগ। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ২৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দে এই দরপত্র আহ্বান করা হয়, এতে পাবনার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। কিন্তু পরে পাবনা শহরের আরেক ঠিকাদার বিপুল আহমেদ কাজটি মূল ঠিকাদারের কাছ থেকে কিনে নেয়।
এলাকাবাসী জানান, জুন মাসের মাঝামাঝি বিপুল কন্সট্রাকশন সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু করে। শুরু থেকেই তারা অনিয়ম করতে থাকে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
তারা আরও জানান, সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্তে নামমাত্র খোয়া দিয়ে বালু মিশিয়ে ভরাট করা হয়। এর ওপর নিম্নমানের প্রাইমকোড দিলে বৃষ্টিতে তা ধুয়ে যায়। এরপর বৃষ্টিতে ভিজে থাকা নরম বেডের উপর কার্পেটিং শুরু করলে স্থানীয় অফিসের লোকজন বাধা দেন। তবে এরপরও ঠিকাদার বৃষ্টির লুকোচুরির মধ্যে কার্পেটিংয়ের কাজ করেন। এ অবস্থায় বৃষ্টিতে অনেক স্থানের কার্পেটিংয়ের ওপরের পাথর উঠতে শুরু করেছে। পরে বুধবার সংস্কার কাজ চলা অবস্থায় সড়কের কার্পেটিং উঠে যায়। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত হয়ে নিম্নমানের কাজে বাধা দেন।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা যায়, সড়ক সংস্কারের প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে বৃষ্টিতেই বেশ কয়েকটি স্থানে সড়কের ওপরের পাথর উঠে গেছে। তাছাড়া সড়কের পাশেও পাথর ছুটে যেতে শুরু করেছে। এমনকি দরপত্র অনুযায়ী কার্পেটিংয়ের পুরুত্ব ২৫ মিলিমিটার হওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ স্থানে তা নেই বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
দরপত্রের মূল ঠিকাদারের কাছ থেকে কিনে নেওয়া কাজের প্রতিষ্ঠানের মালিক বিপুল জানান, পুরাতন পাথরের কাজের কারণে উপরে দুই-একটা পাথর ছুটে যাচ্ছে। তবে কোনো অনিয়ম করা হচ্ছে না। দরপত্র অনুসারে কাজ করা হচ্ছে। আর রোলার নষ্ট হওয়ার কারণে বিটুমিন মিক্সিং শক্ত হয়ে যাওয়ায় একটি জায়গায় কার্পেটিং উঠে যায়।
অভিযোগের বিষয়ে পাবনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম শামসুজ্জোহা বলেন, একটি স্থানে সামান্য কার্পেটিং উঠে গেছে। এটা কোনো অনিয়মের কারণে হয়নি। রুলার মেশিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দেরিতে রোলিং করার কারণে মিক্সিং ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়ায় এটা হয়েছে। পরবর্তীতে সেটা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে এবং দরপত্র অনুযায়ী কাজ চলছে।