atv sangbad

Blog Post

atv sangbad > সারাদেশ > শতবর্ষী স্কুলে কক্ষ সংকট, বটগাছের নিচে পাঠদান

শতবর্ষী স্কুলে কক্ষ সংকট, বটগাছের নিচে পাঠদান

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

নওগাঁ প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ  

নওগাঁর ধামইরহাটের ২৭নং গাংরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খোলা আকাশে বটগাছের নিচে পাঠদান চলছে। বিদ্যালয়ের বয়স শত বছর পেরিয়ে গেলেও আজও শ্রেণিকক্ষ সংকট দূর হয়নি। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে অনেক কষ্ট করে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলার উমার ইউনিয়নের গাংরা গ্রামে ব্রিটিশ আমলে ১৯২০ সালে গাংরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। এটি উপজেলার অন্যতম প্রাচীন একটি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়ে ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরের তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

ওই ভবনের একটি কক্ষ অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অপর দুটি কক্ষ ক্লাস রুম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দুই শিফটে এ বিদ্যালয়ে পাঠদান পরিচালনা করা হয়। প্রথম শিফটে প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর পাঠদান চলে। এছাড়া পঞ্চম শ্রেণীকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রথম শিফট থেকে পাঠদান করা হয়।

ksrm

সেক্ষেত্রে মোট শ্রেণীকক্ষের প্রয়োজন চারটি। আছে মাত্র দুটি। প্রয়োজনের তাগিদে সিঁড়ি ঘরটিকে সংস্কার করে শিক্ষকগণ সেটিও ক্লাসরুম হিসেবে ব্যবহার করছেন। শ্রেণীকক্ষ সংকটের কারণে একটি শ্রেণীকে সবসময় বারান্দায় অথবা বটগাছ না হয় আমগাছের নিচে ক্লাস নিতে হয়। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে ১৪১ জন শিক্ষার্থী এবং প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচজন শিক্ষক রয়েছেন।

সরেজমিনে মঙ্গলবার স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে নিয়ে বটগাছের নিচে খোলা আকাশে পাঠদান করছেন। তাকে সহযোগিতা করছেন সহকারী শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম। তবে বটগাছের চারিদিকে সুন্দর করে ইট, সিমেন্ট, বালু দিয়ে বাঁধানো ও পলেস্তার করা হয়েছে। দিনের পর্যাপ্ত আলো, প্রাকৃতিক বাতাস ও গ্রামের মনোরম পরিবেশে শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা করছে। তবে বর্ষাকালে তাদেরকে বিম্বড়নায় পড়তে হয়।

পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জোনাইদ জানায়, তাদেরকে অনেক কষ্ট করে ক্লাস করতে হচ্ছে। খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে বর্ষাকালে পানিতে শরীর ও বইখাতা ভিজে যায়। অনেক সময় পানিতে ভেজার কারণে জ্বর, সর্দি ও অন্যান্য রোগ হয়।

একই ক্লাসের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন জানায়, অনেক রোদ ও গরমে কারণে বাহিরে ক্লাস করা খুবই কষ্টদায়ক। তারপরও ক্লাস করতে হয়। একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা হলে এ সমস্যা থাকতো না।

অপর শিক্ষার্থী রমজান আলী আক্ষেপ সুরে জানান, অনেক বড় বড় স্যার বিদ্যালয়ে এসে বলে নতুন ভবন নির্মাণ হবে। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন হয়নি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ভেঙ্গে ফেলার পর থেকে শ্রেণী সংকট দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি এবং বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ছবিসহ বিভিন্ন তথ্য পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে যে ভবনে ক্লাস নেওয়া হয় সেটির বর্ষাকালে ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। তবে সংস্কার করে সেটি ব্যবহারযোগ্য করা হয়েছে। অতিদ্রুত একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা হলে শ্রেণী কক্ষের সমস্যা থাকবে না। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আনন্দে পাঠ গ্রহণ করতে পারবে।

উপজেলা প্রকৌশলী আলী হোসেন জানান, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। একটি কার্যবিবরণী তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ব্রেকিং নিউজ :