atv sangbad

Blog Post

atv sangbad > জাতীয় > ১৫ দিন দুই মেয়েকে নিয়ে একসঙ্গে থাকতে মা-বাবাকে নির্দেশ

১৫ দিন দুই মেয়েকে নিয়ে একসঙ্গে থাকতে মা-বাবাকে নির্দেশ

সৈকত মনি, এটিভি সংবাদ  

দুই মেয়ে শিশুকে নিয়ে জাপানি মা ও বাংলদেশি বাবাকে গুলশানের একটি বাসায় ১৫ দিন একসঙ্গে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

তাদের একসঙ্গে থাকার বিষয়টি তদারকি করবেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা। আর তাদের নিরাপত্তা দেবে পুলিশ।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

এর আগে ১৯ আগস্ট দুই মেয়েকে আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাস আবেদন করেছিলেন জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকো (৪৬)। দুই শিশুকে আজ হাজির করার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। সে অনুসারে দুই শিশু আজ আদালতে আসে।

মঙ্গলবার সকাল ১০টার পর সিআইডির তত্ত্বাবধানে দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা আদালতে উপস্থিত হয়। এর কিছুক্ষণ পর আদালতে হাজির হন তাদের বাবা শরীফ ইমরান। এরিকোও আদালতে হাজির হয়েছেন। শুনানি শেষে বিকালে এ আদেশ দেন আদালত।

২২ আগস্ট মেয়ে শিশু দুটিকে ইমরানের বারিধারার বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারপর থেকে তারা উইমেন সাপোর্ট সেন্টারে ছিল।

এরিকো পেশায় একজন চিকিৎসক। তার আইনজীবী শিশির মনিরের তথ্যমতে, ২০০৮ সালে জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশি-আমেরিকান নাগরিক শরীফ ইমরান (৫৮) জাপানি আইন অনুযায়ী বিয়ে করে টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। তাদের ১২ বছরের সংসারে তিন কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। তারা তিনজনই টোকিওর চফো সিটিতে অবস্থিত আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের শিক্ষার্থী।

জাপানি আইন অনুসারে নাকানো এরিকো (৪৬) ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক শরীফ ইমরান (৫৮) ২০০৮ সালের ১১ জুলাই বিয়ে করেন। এর পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। এক যুগের দাম্পত্যজীবনে তাদের তিন কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে তাদের বয়স যথাক্রমে ১১, ১০ ও ৭ বছর। তিন মেয়ে টোকিওর একটি স্কুলে পড়ছিল।

চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। গত ২১ জানুয়ারি ইমরান টোকিওর ওই স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তার এক মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন। তবে এরিকোর সম্মতি না থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ইমরানের আবেদন নাকচ করে।

পরবর্তী সময়ে স্কুলবাসে করে বাসায় ফেরার পথে বাসস্টপেজ থেকে ইমরান বড় দুই মেয়েকে (১১ ও ১০) অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। গত ২৫ জানুয়ারি ইমরান তার আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছে সন্তানদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। কিন্তু এরিকো তা প্রত্যাখ্যান করেন।

এরিকো ২৮ জানুয়ারি টোকিওর পারিবারিক আদালতে তার সন্তানদের জিম্মার জন্য আদেশ চেয়ে মামলা করেন। আদালত ৭, ১১ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক সাক্ষাতের আদেশ দেন। তবে এই আদেশ ভঙ্গ করে ইমরান শুধু একবার মায়ের সঙ্গে বড় দুই মেয়ের সাক্ষাতের সুযোগ দেন।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ইমরান মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি।

গত ৩১ মে টোকিওর পারিবারিক আদালত এরিকোর অনুকূলে বড় দুই মেয়ের জিম্মা হস্তান্তরের আদেশ দেন। এর পর করোনা পরিস্থিতির কারণে এরিকো এত দিন বাংলাদেশ আসতে পারেননি। ছোট মেয়েকে মায়ের কাছে রেখে ১৮ জুলাই শ্রীলংকা হয়ে বাংলাদেশে আসেন এরিকো।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ব্রেকিং নিউজ :