atv sangbad

Blog Post

atv sangbad > সম্পাদকীয় > মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য

মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য

এস এম জামান, এটিভি সংবাদ 

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে বাংলার দামাল ছেলেরা পাক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। তাদের একটাই দাবী ছিল বাংলার মাটিতে স্বাধীনভাবে মায়ের ভাষায় কথা বলতে পাড়া, স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকা। কিন্তু পাকিস্তানী পাক সেনাবাহিনীরা সেই সুযোগ দিতে নারাজ। যার প্রতিফলনে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে, মা বোনদের সম্ভ্রম এর বিনিময়ে এই বিজয় অর্জিত হয় আজকের দিনে। তাই বাঙ্গালী জাতির জীবনে আজকের এই দিন অর্থাৎ, এই বিজয় দিবস এর তাৎপর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

১৯৭১ সালে যদি আমরা পাক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে না নামতাম কিংবা রুখে না দাঁড়াতাম তবে হয়তো আজকের এই বিজয় দিবস আমরা বাঙ্গালীরা উদযাপন করতে ব্যর্থ হতাম। আজও হয়তো আমরা পৃথিবীর বুকে লাল সবুজের দেশ বাংলাদেশ নামে কোন চিহ্ন খুঁজে পেতাম না। বরং বাংলাদেশ পরিচিত হত পাকিস্তানের কোনো কলোনি হিসেবে। শাসন, শোষণ ও বঞ্জনার মধ্য দিয়ে সময় কাটতো পুরো বাঙ্গালী জাতির।

বঞ্চিত থাকতাম আমরা সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক দিক থেকেও। কিন্তু তা হতে দেয়নি বাংলার দামাল ছেলেরা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর এর আহ্বানে হাতের কাছে যা ছিল তা নিয়েই ঝাপিয়ে পরে পাক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। “রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই” এই শ্লোগানে। শুধুমাত্র দামাল ছেলেরা নয়, অংশগ্রহণ করেছে মেয়েরাও। হাজার হাজার মা বোনদের ত্যাগ করতে হয়েছে তাদের সম্ভ্রম। তবুও তারা পিছপা হয়নি এতটুকু। বিজয় তাদের চাই, মায়ের ভাষা বাংলা চাই, এক টুকরো স্বাধীন দেশ চাই।

ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে কারাগার বন্দি হয় জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। তবুও এতটুকুও দমিয়ে রাখতে পারেনি তাকে। ঠিকই তার ডাকে সাড়া দিয়েছিল বাংলার দামাল ছেলেরা। সকলে মিলে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে যায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সাথে। বাংলার দামাল ছেলেদের একটাই দাবী “রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই।” ভাষার জন্য লক্ষ লক্ষ প্রাণ দেয়া এ যেনো পৃথিবীর বুকে এক অমূল্য দৃষ্টান্ত। যা আর কোথাও নেই।

আর তাই প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর পালন করা মহান বিজয় দিবস। তাদের স্মরণে যারা বাংলার জন্য প্রাণ দিয়েছেন গভীর শ্রদ্ধায় নিমজ্জিত হয় সাড়া বাংলাদেশ। বিজয় দিবস উদযাপনে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহর পথে এক দিন ও এক রাত (দেশের) সীমানা পাহারা দেওয়া এক মাসব্যাপী রোজা পালন ও মাসব্যাপী রাত জাগরণ করে নামাজ আদায়ের চেয়ে বেশি কল্যাণকর। এই অবস্থায় যদি ঐ ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে; তবে যে কাজ সে করে যাচ্ছিল, মৃত্যুর পরেও তা তার জন্য অব্যাহত থাকবে। তার রিজিক অব্যাহত থাকবে, কবর ও হাসরে ঐ ব্যক্তি ফেতনা থেকে মুক্ত থাকবে।’

সুতরাং বুঝতেই পারছেন, যারা দেশের কল্যাণের জন্য, মাতৃভূমির জন্য প্রাণ ত্যাগ করেছেন মৃত্যুর পরও তাদের অবস্থান এবং মর্যাদা অব্যাহত থাকবে। আর তাই এই মহান বিজয় দিবস এর উছিলায় প্রতি বছর এই দিনে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি দেয়ার মাধ্যমে পালিত হয়।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ব্রেকিং নিউজ :