হবিগঞ্জ প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটের নতুন ব্রিজ থেকে সড়ক যুক্ত হয়েছে শায়েস্তাগঞ্জের কলিমনগরে। আবার শায়েস্তাগঞ্জ শহরের দাউদনগর থেকে যুক্ত ওই সড়কপথ চলে গেছে জেলা শহরে। সড়কটির উভয় পাশে নানা প্রজাতির এক থেকে দেড় হাজার গাছ ছিল।
এসব গাছে আবাসস্থল ছিল শত শত পাখির। স্থানীয় বন বিভাগের ভাষ্য মতে, এক হাজার ২৪৬টি গাছ সামাজিক বনায়নের আওতায় প্রায় ১০ কিলোমিটারে রোপণের ১৩ বছরের মাথায় নিলামের মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে।
এখানে পরিবেশ প্রেমিকদের ভাষ্য, গাছগুলোতে থাকা পাখিগুলো এখন কোথায় যাবে। গাছ কর্তনে পাখিগুলো আপন নিবাস হারিয়েছে। শুধু তাই নয়, রোপণকৃত আকাশমনি, শীল করই, ম্যানজিয়াম, লোহা, মেহগনি জাতীয় গাছ। ওইসব গাছের জন্য সড়কটি হয়ে উঠেছিল অপরূপ। পথচারীরা বিশ্রাম নিতেন গাছের নিচে। প্রচণ্ড গরমে সড়কটি দিয়ে যাতায়াতে গাছের ছায়া ও বাতাসে স্বস্তি পাওয়া যেত। গাছ কর্তনের ফলে এ দৃশ্য আর দেখা যাবে না। এর প্রভাব পড়েছে পরিবেশের উপর।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, এই উষ্ণায়নের সময়ে যখন গাছ রক্ষার জন্য আমরা আন্দোলন করছি। তখন এভাবে গাছ কেটে ফেলে শুধু পরিবেশের ক্ষতি করেনি, সড়কের সৌন্দর্য্যও নষ্ট হয়েছে। আশ্রয়হীন হয়েছে পাখিগুলো। ছোট গাছগুলোও কেটে ফেলা হয়েছে সড়কের পাশ থেকে। ক্রমাগতভাবে তাপমাত্রা যখন বাড়ছে, বেশি বেশি করে গাছ লাগানোর কথা যখন বলা হচ্ছে। ঠিক সেই সময় গাছগুলো না কেটে বিকল্প কোনো চিন্তা করা উঠিত ছিল। যেহেতু এখনই সড়ক প্রশস্ত হচ্ছে না তাই এক সঙ্গে না কেটে ভাগ করে কাটলে পরিবেশ রক্ষা পেত।
হবিগঞ্জের কৃতিসন্তান বাপা জাতীয় কমিটির সদস্য সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক ওই সড়কের উভয় পাশে যৌক্তিক দূরত্বে অবিলম্বে নতুন গাছ রোপণ এবং অবশিষ্ট গাছগুলো রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দায়িত্বশীলদের প্রতি দাবি জানান।
জানা গেছে, গাছগুলো বিক্রি মূল্য থেকে বন বিভাগ পাবে ৪৫ ভাগ। ৪৫ ভাগ পাবেন যারা গাছ রোপণ করেছিলেন এবং বাকি ১০ ভাগ টাকা দিয়ে বন বিভাগ আবারো বনায়ন করবে।
হবিগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সল বলেন, ১০ কিলোমিটার সড়কে বন বিভাগ সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে গাছ লাগাই। বন বিভাগ এই গাছ কাটার জন্য জেলা বন ও পরিবেশ কমিটি বরাবর আবেদন করলে ওই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গাছগুলো কাটা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কটি ডাবল লেন করতে একটি ডিপিপি (ডেভলাপম্যান্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল) ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে, তবে সেটি এখনও অনুমোদন হয়নি।